নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত সময়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর আয় ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও ২৩ দল হিসাব না দিয়ে সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। ইসির ৪৪টি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্য আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ ২১ দল নির্ধারিত সময়ে তাদের হিসাব জমা দিয়েছে। তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগসহ ২৩ দল আয় ব্যয়ের হিসাব জমা না দিয়ে সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়। সেই অনুযায়ী শেষদিন বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ২১টি রাজনৈতিক দল তাদের তাদের বার্ষিক আয় ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে বলে জানিয়েছে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।

ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, আমাদের নির্ধারিত সময়ে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্য ২১টি রাজনৈতিক দল তাদের বার্ষিক আয় ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে। বাকি ২৩ দল সময় চেয়ে আবেদন করেছে।

ইসি জানায়, ২০২৩ পঞ্জিকা বছরে আওয়ামী লীগের আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ কোটি ১৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ১৬ কোটি ৪৩ লাখ ৯ হাজার ২৩২ টাকা বেশি। একই বছর দলটির ব্যয়ও বেড়েছে, আগের চেয়ে যা দুই কোটি ৫১ হাজার ৪২১ টাকা বেশি।

এদিকে টানা তিন বছর ধরে ঘাটতিতে থাকার পর গত বছর লাভের মুখ দেখলেও এবার ফের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির। এতে দলটির ‘ক্ষতি’ হয়েছে দুই কোটি ৫৪ লাখ ৪৩ হাজার ৮১৯ টাকা।

অন্যদিকে আগের বছরের তুলনায় জাতীয় পার্টির আয় ও ব্যয় কিছুটা কমেছে। তবে তহবিল আগে চেয়ে বেড়েছে। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া দলটির ২০২৩ পঞ্জিকা বছরের বিবরণী বলছে, জাপা আয় করেছে দুই কোটি ২২ লাখ দুই হাজার ৪০৫ টাকা। আর ব্যয় করেছে এক কোটি ১৩ লাখ ১৮ হাজার ৫২৫ টাকা।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী পর পর তিন বছর দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে সংশ্লিষ্ট দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।

যে দলগুলো আয় ব্যয়ের হিসেব জমা দিয়েছে

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, গণতন্ত্রী পার্টি, খেলাপত মজলিশ, ইনসানিয়াত বিপ্লব, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ, জাতীয় পার্টি (জেপি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টি, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাঙ্গালদেশ, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট।

যারা সময়ের আবেদন করেছে

বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বিএনএফ, বাংলাদেশ মুসলীম লীগ, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, বাংলাদেশ জাসদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাপ, মুক্তিজোট, তৃণমূল বিএনপি, বাসদ, গণফ্রন্ট, গণফোরাম, বাংলাদেশ মুসলীম লীগ, ওয়াকার্স পার্টি, জাসদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, কল্যাণ পার্টি, বিএনএম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ।

যারা হিসাব জমা না দিয়ে সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে এই বিষয়ে ইসির এই অতিরিক্ত সচিব বলেন, আমাদের নিয়ম অনুযায়ী যেসব রাজনৈতিকদল শেষ দিনে বার্ষিক বার্ষিক হিসেব জমা দেয়নি তারা প্রত্যকে সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। আমরা বিষয়টি কমিশন সভায় ওঠাবো কমিশন সময় বাড়াবে কি বাড়াবেনা তা সিদ্ধান্ত নেবে।

এসআর/এসএম