ফাইল ছবি

কোটা আন্দোলনের সহিংসতার জেরে দেশে কারফিউ জারি করেছে সরকার। সময় সময় কারফিউ শিথিলও করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেও দিন যতই যাচ্ছে সড়কে মানুষের চলাচল আগের চেয়ে বাড়ছে। তবে এখনও বেশিরভাগ আসন ফাঁকা রেখে ঢাকা ছাড়ছে দূরপাল্লার বাসগুলো। ফলে বাধ্য হয়ে বাসের ট্রিপ কমিয়েছেন মালিকরা।

এদিকে গাড়ি চলাচলের সংখ্যা কমে যাওয়ায় পরিবহন সংশ্লিষ্টরা পড়েছেন বিপাকে। পরিবহন শ্রমিকদের ঠিকমতো মজুরি দিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন বাস মালিকরা। সহিংসতার পর কারফিউ চলার সময় দূরপাল্লার বাস চললেও মিলছে না যাত্রী। ৬০-৭০ শতাংশ সিট খালি রেখেই বেশিরভাগ বাস ঢাকা ছাড়ছে।

মহাখালী বাস টার্মিনালে সৌখিন এক্সপ্রেসের একটি বাসের সুপারভাইজার জানান, ৪০ সিটের গাড়িতে ঢাকা থেকে লোক পাওয়া যায় ১০-১৫ জন। ভাগ্য ভালো থাকলে পথে আরও কিছু লোক ওঠে। আর না হলে এরকম খালি অবস্থায়ই ময়মনসিংহ যেতে হয়। এতে যে পরিমাণ টাকা আসে তাতে বাস চালানোর খরচই ওঠে না ঠিকমতো। আমরা কী নেব আর মালিককে কী দেবো।

রাজধানীর আরামবাগ থেকে ছেড়ে যায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরিশাল, খুলনা, যশোর, বেনাপোলসহ বিভিন্ন জেলার বাস। সোমবার সন্ধ্যায় সেখানে গিয়ে দেখা যায়, কাউন্টারগুলোর সামনে বাস দাঁড়িয়ে থাকলেও নেই যাত্রীদের চিরচেনা সেই ভিড়। নেই দীর্ঘ অপেক্ষা। সেখানকার এক পরিবহন শ্রমিক জানান, শিডিউল মতো গাড়ি ছাড়তে পারছি না। আমাদের বিকেল সাড়ে ৩টায় গাড়ি ছাড়ার কথা থাকলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যাত্রীর অভাবে ছাড়তে পারছি না। বেনাপোলের পথে মাত্র ৪ জন যাত্রী হয়েছে।

এদিকে অনলাইনগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বেশিরভাগ গন্তব্যের আসনের টিকিটই বিভিন্ন বাসের সাইটে পড়ে। কোন বাসে ১৫/১০/২০টি আসন বুকিং রয়েছে।

বাংলাদেশ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক (ঢাকা) সফিকুল আলম খোকন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আন্দোলনে যা ক্ষতি হয়েছে তা মালিকদের ক্ষতি, দেশের ক্ষতি। সবকিছু মিলে প্রতিদিন পরিবহন খাতে গড়ে কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকা লস হচ্ছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, গাড়ি বন্ধ থাকলে মালিকরা টাকা পাচ্ছে না। তাদের তো ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে। বাসের চালক হেলপারকেও তো পালতে হয়।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল ৭টা থেকে কারফিউ শিথিল হয়েছে। এই সময় মানুষ তার প্রয়োজনীয় কাজকর্মের জন্য বাইরে চলাফেরা। সন্ধ্যা ৬টা থেকে আবার কারফিউ বলবৎ থাকবে।

এমএইচএন/এসএম