ছবি : সংগৃহীত

প্রতিদিন জাতীয় দৈনিকে অসংখ্য খবর প্রকাশিত হয়। সেইসব খবর থেকে আলোচিত কিছু খবরের সংকলন করা হলো।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী বিক্ষোভ-সংঘর্ষে বেশি মৃত্যু হয়েছে শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবী মানুষের। নিহত ব্যক্তিদের ৭৫ শতাংশ শিশু, কিশোর ও তরুণ। হাসপাতাল, স্বজন ও মরদেহ নিয়ে আসা ব্যক্তিদের সূত্রে সংঘর্ষ-সংঘাতে এখন পর্যন্ত ২১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বয়স, পেশা ও আঘাতের ধরন এবং কোন এলাকায় আহত অথবা নিহত হয়েছিলেন, তার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে ১৫০ জনের। এর মধ্যে ১১৩ জন শিশু, কিশোর ও তরুণ।

এর পাশাপাশি অন্যান্য খবরগুলো দেখে আসি—

প্রথম আলো

নিহত ১১৩ জন কম বয়সী, শিক্ষার্থী ৪৫

বিশ্লেষণে দেখা যায়, নিহতদের মধ্যে ১৯ জন শিশু ও কিশোর। এর মধ্যে চার বছর বয়সী শিশুও রয়েছে। ১৮ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে ৯৪ জন। ৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী ২১ জন। ৪০ বা এর বেশি বয়স ১৬ জনের।

এই বিশ্লেষণে ১৮ বছরের কম বয়সীদের শিশু এবং ২৯ বছর পর্যন্ত বয়সীদের তরুণ হিসেবে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের যুবা হিসেবে উল্লেখ করে এবং সাধারণভাবে তাঁদের তরুণ বলা যায় বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম।

আজকের পত্রিকা

সহিংসতায় হতাহত: পুলিশের মামলায় ‘গুলি’ নেই

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের বুক ও পেট পুলিশের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল। ময়নাতদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরাও সে কথা বলেছেন। কিন্তু এ ঘটনা নিয়ে থানায় করা মামলায় গুলিতে নিহত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ নেই।

কোটা আন্দোলনের হতাহতের সংখ্যা নিয়ে শুরু থেকেই নানা তথ্য শোনা যাচ্ছিল। তবে গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সহিংসতার ঘটনায় সরকার এ পর্যন্ত ১৪৭ জনের মৃত্যুর তথ্য জানতে পেরেছে। যদিও গত শনিবার নিহত ২৬৬ জনের তালিকা প্রকাশ করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মোর্চা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারা প্রত্যেকের নাম, পরিচয়, পেশা ও বয়সের পাশাপাশি কে কখন কোথায় নিহত হয়েছেন, সেসব তথ্যও দিয়েছে সংবাদ সম্মেলন করে।

কালবেলা

গৃহবিবাদে ধুঁকছে আ.লীগ

দীর্ঘ দেড় দশক ধরে ক্ষমতায় থাকলেও সাংগঠনিক সক্ষমতা বাড়াতে পারেনি আওয়ামী লীগ। বরং অনেক ক্ষেত্রেই দুর্বল হয়েছে দলের অবস্থা। দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে একসময় সারা দেশে শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো থাকলেও এই মুহূর্তে অনেকটাই এলোমেলো অবস্থা।

জানা গেছে, ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের (‘হাইব্রিড’ হিসেবে পরিচিত) প্রভাব বিস্তার, ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন ও প্রভাবশালীদের একাধিপত্য বেড়ে যাওয়ায় তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠন দুর্বল হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া নিয়ে ব্যস্ত। এতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে। অনেক নেতাকর্মীর নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণে এই জনবিচ্ছিন্নতা আরও বেড়েছে।

দেশ রূপান্তর

‘মানবাধিকার ইমেজ’ বদলে উদ্যোগ চান ব্যবসায়ীরা

গত কয়েক দিনে কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনায় বিশ্বে বাংলাদেশের ‘মানবাধিকার ইমেজ’ নিয়ে চিন্তিত দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে সরকারকে একক ভূমিকা পালনের পাশাপাশি বেশি বেশি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আইনের মাধ্যমে দেশের শৃঙ্খলা উন্নত হয়েছে বলে প্রচার করার পরামর্শও দিয়েছেন তারা। সরকারের উপদেষ্টা ও মন্ত্রীরা ভাবমূর্তি সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে তা উদ্ধারে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চেয়েছেন।

বৈঠকে উপস্থিত থাকা কয়েকজন ব্যবসায়ী নেতা জানিয়েছেন, সালমান এফ রহমান ব্যবসায়ীদের কাছে ক্ষতির বিবরণ জানতে চেয়েছিলেন। তখন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ তার বক্তব্যে মানবাধিকার নিয়ে ইমেজ সংকটের বিষয়টি তুলে আনেন।

কালের কণ্ঠ

নির্দলীয় নয়, শীর্ষ নেতৃত্বে ছাত্রশক্তির নেতারা

কোটা সংস্কার আন্দোলন পরিচালনায় নেতৃত্ব দেওয়া প্ল্যাটফরম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে নির্দলীয় দাবি করা হলেও এর নেতৃত্বে রয়েছেন একাধিক ছাত্রসংগঠনের শীর্ষ নেতারা। সমন্বয়কদের নামের তালিকায় প্রথম ১০ জনের মধ্যে পাঁচজনই গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি নামের একটি ছাত্রসংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। এই সংগঠনটির নেতারাই আন্দোলনের নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।

৬৫ সদস্যের ওই কমিটিতে ২৩ জন সমন্বয়ক ও ৪২ জন সহসমন্বয়ক রয়েছেন। এই কমিটির তালিকা ঘেঁটে দেখা যায়, সমন্বয়কদের প্রথম ১০ জনের মধ্যে পাঁচজনই গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা। তাঁরা হলেন ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব নাহিদ ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির আহ্বায়ক আসিফ মাহমুদ ও যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কাদের এবং সদস্যসচিব মো. আবু বাকের মজুমদার ও যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুল হান্নান মাসুদ। সমন্বয়কদের তালিকায় ১১ নম্বরে থাকা সোহাগ মিয়াও ছাত্রশক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত।

বণিক বার্তা

স্কলারশিপ ও ভিসা নিয়ে শঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র গমনেচ্ছু সহস্রাধিক শিক্ষার্থী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন নাসরিন জেবিন। একাডেমিক বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে পেয়েছেন তাজউদ্দীন আহমদ স্বর্ণপদকও। উচ্চতর ডিগ্রির (পিএইচডি) জন্য জেবিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির ফুল ফান্ড স্কলারশিপ পেয়েছেন।

উচ্চশিক্ষার জন্য প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। গত বছরও দেশটিতে ১৩ হাজার ৫৬৩ শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য গেছেন। বাংলাদেশ থেকে উচ্চ শিক্ষা নিতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে ১০ জুলাই ‘মিডিয়া নোটে’ মার্কিন দূতাবাস জানায়, ২০২২ সালের তুলনায় গত বছর বাংলাদেশী শিক্ষার্থী পড়তে যাওয়ার হার বেড়েছে ২৮ শতাংশ। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ থেকে গত বছর যে পরিমাণ শিক্ষার্থী গেছেন, তা এ যাবৎকালের রেকর্ড। যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশী শিক্ষার্থী যাওয়ার তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম।

ইত্তেফাক

সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা ৬ সমন্বয়কের

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) হেফাজত থেকেই সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ক। রোববার (২৮ জুলাই) রাতে ডিবি কার্যালয় থেকে সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের এ ঘোষণা দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা লিখিত বার্তা পাঠ করে শোনান।

সমন্বয়করা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেকেই অপ্রত্যাশিতভাবে আহত-নিহত হয়েছেন। এছাড়া রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন সহিংস ঘটনা ঘটেছে। আমরা এ সব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচারের দাবি জানাই।

সমকাল

গ্রেপ্তার রিমান্ডে মানা হচ্ছে না উচ্চ আদালতের নির্দেশনা

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার পর সমানে চলছে ধরপাকড়। এ পরিস্থিতিতে অভিযোগ উঠেছে, গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মানছেন না উচ্চ আদালতের নির্দেশনা। ভুক্তভোগীর আইনজীবী ও স্বজনরা বলছেন, গ্রেপ্তারের পর এবং রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে অমানবিক নির্যাতন চলছে।

সংশ্লিষ্ট আইনজীবী ও স্বজনরা সমকালকে জানিয়েছেন, আগে গ্রেপ্তার ও রিমান্ড নিয়ে এতটা ভয় ছিল না। এবার কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিভিন্ন থানার নাশকতার মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি না হওয়ার পর নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। গ্রেপ্তারের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয় দিচ্ছে না, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে তোলার নির্দেশনা থাকলেও তা হচ্ছে না, আইনজীবী কিংবা পরিবারকে জানানোরও বালাই নেই। রিমান্ডে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ নিম্ন আদালতকে জানালেও প্রতিকার মিলছে না।

দেশ রূপান্তর

বেনজীর পরিবারের ১১৬ ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-কন্যার নামে ১১৬টি ব্যাংক হিসেবে (চলতি, সঞ্চয়ী, স্থায়ী আমানত, বৈদেশিক মুদ্রা) কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। যার মধ্যে অনেক অস্বাভাবিক লেনদেনও রয়েছে। বেনজীর ও তার স্ত্রী-কন্যার নামে ৪৩ কোটি টাকার বেশি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল রবিবার হাইকোর্টে এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে দুদক।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেনজীর আহমেদের নামে ৯ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৫৬৫ টাকা মূল্যের, তার স্ত্রী জীশান মীর্জার নামে ২১ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ৪৩ টাকা মূল্যের, তাদের জ্যেষ্ঠ কন্যা ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীরের নামে ৮ কোটি ১০ লাখ ৮৯ হাজার ৬৯৬ টাকা মূল্যের এবং মেজো কন্যা তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে ৪ কোটি ৭৫ লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৮ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।

মানবজমিন

রেমিট্যান্সে বড় ধাক্কা

দেশে ৫ দিনের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ব্যাংক ও মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) মাধ্যমে রেমিট্যান্স সংগ্রহে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে । রেমিট্যান্সের এ নেতিবাচক প্রবাহ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভের ওপরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এ অবস্থায় বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছে সরকার। নানা কৌশলে যেকোনো মূল্যে রেমিট্যান্স বাড়াতে কাজ শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ম্যানুয়াল ৬ অনুযায়ী, ৩০শে জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১.৭৮ বিলিয়ন ডলার।

এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা জানান, তারা স্বাভাবিক দিনে ৫ থেকে ৭ কোটি টাকা রেমিট্যান্স পেলেও, ইন্টারনেট সংযোগের ধীরগতির কারণে তা ৮০ লাখ টাকায় নেমে এসেছে। গত ১লা জুলাই থেকে ১৩ই জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৯৭৮ মিলিয়ন ডলার।

এছাড়া স্বজনের কান্না / ‘মা, আমি ছোট আমারে কে গুলি করবে?’; স্বজনের কান্না / ‘পুলাডা ছটফটাইয়া আমার কুলে মইরা গেল’; পুলিশে বড় রদবদল; নাশকতাকারীদের গ্রেপ্তারে এলাকাভিত্তিক অভিযান চলছে; সহিংসতায় এ পর্যন্ত ১৪৭ জন নিহত; স্বজনের কান্না / ‘আমার ছেলের জীবন ও জীবিকা হুমকির মুখে’; স্বজনের কান্না / ‘আমার ছেলের জীবন ও জীবিকা হুমকির মুখে’—সংবাদগুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।