বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ আজ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কের ডিবি অফিসে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সব কর্মসূচি ‘প্রত্যাহারের’ ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করে নতুন কর্মসূচি দিয়েছে সংগঠনটির অন্য সমন্বয়করা। কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ (সোমবার) সারাদেশে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার (২৮ জুলাই) রাত পৌনে ১২টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাংবাদিকদের হুয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে সংগঠনের অন্য সমন্বয়কদের পক্ষে এ ঘোষণা দেন সমন্বয়ক আব্দুল কাদের। এসময় দাবি আদায়ের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করতে বাংলাদেশের সব নাগরিককে অনুরোধ করেন তারা।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ও ছাত্রলীগের হামলায় নিহত শত শত শহীদের আত্মত্যাগ তিরস্কার করে ডিবি কার্যালয়ে বন্দুকের নলের মুখে জিম্মি করে সমন্বয়কদের মাধ্যমে জোরপূর্বক স্ক্রিপ্টেড বিবৃতি আদায়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমাদের দাবি আদায়ে আমরা অবিচল ছিলাম, রয়েছি এবং থাকবো।
আরও পড়ুন
সরকার শহীদের রক্তের সঙ্গে তামাশা করছে উল্লেখ করে নেতারা বলেন, প্রিয় দেশবাসী ও ছাত্রসমাজ, বিগত কয়েকদিন যাবত গণহত্যা, গণগ্রেপ্তারের পর সরকার এখন এক নতুন নাটকের সৃষ্টি করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে জিম্মি করে অস্ত্রের মুখে স্ক্রিপ্টেড বিবৃতি দিয়ে, ছাত্রসমাজের দাবিসমূহের প্রতি সরকার চরম ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছে। শুধু তাই নয়, সারাদেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত শহীদদের পরিবারকে হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে, আর্মড ফোর্সকে ব্যবহার করে ঢাকায় এনে সরকার তাদের থেকে মিথ্যা জবানবন্দি নেওয়া ও সমস্ত দায় আন্দোলনকারীদের ওপর চাপিয়ে শহীদের রক্তের সঙ্গে তামাশা করেছে। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে ভাই, জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত ছাত্রসমাজ শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করতে পারে না।
দাবি আদায় না হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ছাত্রসমাজের আন্দোলন চলবে উল্লেখ করে তারা বলেন, প্রিয় দেশবাসী, আপনারা জানেন, দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকার সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের স্ট্রিম রোলার চালিয়ে যাচ্ছে। ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের পর সরকার সারাদেশে রেইড করে গণগ্রেপ্তার করেছে। হাজার হাজার মামলা ও গণগ্রেপ্তার করা হচ্ছে। জানালার পাশে পড়ার সময় কোমলমতি শিশু সামিরকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর স্মরণকালের সবচেয়ে বড় বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়েছে। এমনকি স্কুল ও কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়ে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে আহত ও শহীদ করা হয়েছে। এই অবস্থায় আমরা কঠোর ভাষায় বলতে চাই, আমাদের দাবি আদায় না হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ছাত্রসমাজের আন্দোলন চলবে।
উল্লেখ্য, রোববার (২৮ জুলাই) রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) হেফাজতে থেকে ভিডিও বার্তায় লিখিত বক্তব্যে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক। তবে আন্দোলনের বাকি সমন্বয়কেরা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেন এবং জিম্মি করে এ ভিডিও বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
কেএইচ/এসএম