জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ধ্বংসাত্মক কাজ শিক্ষার্থীরা করেছেন কি না তা এখন বড় প্রশ্ন। কারণ তারা এতে জড়িত ছিলেন না বলে জানিয়েছেন। যারা সম্পদ বিনষ্ট করেছে তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তবে কোনো নিরীহ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুর্বৃত্তদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর-১০ নম্বরের মেট্রোরেল স্টেশন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল (সিপিএইচ) পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। 

ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল মিরপুর-১০ নম্বরের মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি, প্রতিনিধিদল বিকেল ৩টায় সহিংসতায় আহত শিক্ষার্থী ও পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল (সিপিএইচ) পরিদর্শন করেন।

এ সময় কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা, সচিব সেবাষ্টিন রেমা ও পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) কাজী আরফান আশিক উপস্থিত ছিলেন। 

ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, হামলায় অতি মূল্যবান সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্টেশনের ই-সিস্টেম, পাঞ্চ মেশিন, ভেন্ডিং মেশিন, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র, কম্পিউটার ও বিভিন্ন যন্ত্রপাতিসহ কোটি কোটি টাকার জিনিসপত্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

তিনি বলেন, মেট্রোরেল জনজীবনে স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য তৈরি করেছে এবং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বাক্ষর বহন করে। দুটি স্টেশনে হামলায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা জনজীবনে চরম দুর্ভোগ বয়ে এনেছে এবং দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে। সাধারণ জনগণ যারা এর সুফল ভোগ করছিল তাদের জীবনযাত্রার অধিকার হরণ করা হয়েছে।

মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, আমরা হতাহতদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় খোঁজ-খবর নিয়েছি। সহিংসতায় আক্রান্ত রোগীর ধরন ও কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছি। হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী আক্রান্ত ২৪০ জনের মধ্যে ৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষার্থীদের বাইরে যারা আছেন তাদের মধ্যে যুবক ও মধ্যবয়সী বিভিন্ন ব্যক্তি রয়েছেন। এক্ষেত্রে, আক্রান্ত শিক্ষার্থী ও অন্যান্য রোগীদের  উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতে কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। 

পুলিশ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, প্রত্যেকের জীবন ধারণের অধিকার রয়েছে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক পুলিশ সদস্য নির্মমতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছেন, যা অত্যন্ত মর্মপীড়াদায়ক। আমরা আহতদের শরীরে নির্মমভাবে প্রহারের চিহ্ন, রড দিয়ে মাথায় আঘাত, বুলেটের আঘাত ও সেলাই দেখেছি। কমিশন জানতে পেরেছে, ইতোমধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। পুলিশ সদস্যদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

জেইউ/এমএ