কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুন ও হামলায় মিরপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ঢাকা মেট্রো সার্কেল-১ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া সেতু ভবনের পাশে থাকা বিআরটিএর সদর কার্যালয়ের ডেটা সেন্টারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ি রেজিস্ট্রেশনসহ কোনো ধরনের সেবা দিতে পারছে না সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকালে মিরপুরে বিআরটিএর ঢাকা মেট্রো সার্কেল-১ সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিআরটিএতে প্রবেশের ৩টি গেটের মধ্যে ২টি গেটের পাশে থাকা ছোট ভবন ২টিতে আগুনে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফলে ওই রুমে থাকা জিনিসপত্র পুড়ে গেছে। প্রধান গেটের পাশে থাকা উপ-পরিচালকের ভবনের নিচের পার্কিংয়ে থাকা একটি গাড়ি পুড়ে নিঃশেষ অবস্থায় দেখা গেছে। বিআরটিএর পরিচালন কার্যালয়ের প্রতিটি রুমেরই জানালার কাঁচ ভাঙা পাওয়া গেছে।

অত্যাধুনিক ভিহিক্যাল ইন্সপেকশন সেন্টারের ভেতরেও ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সেখানে ইন্সপেকশন মেশিনের ওপর থাকা একটি গাড়ির চেসিসেরে ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে। এছাড়া প্রতিটি ইন্সপেকশন ডিভাইস ছিন্ন ভিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

সরেজমিন শেষে সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএ চেয়ারম্যান গৌতম চন্দ্র পাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিআরটিএর সেবা চালু হতে সময় লাগবে। কারণ, এটার সঙ্গে আমাদের হেড অফিসের সার্ভারের সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের হেড অফিসের ইলেকট্রিক সিস্টেম, আইটি সিস্টেম ও সার্ভার যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটা পুনঃস্থাপন করতে সময় লাগবে।

তিনি বলেন, আমরা এখন কি কি ক্ষতি হয়েছে সেটা বের করার চেষ্টা করছি। তারপর সেটি বিশ্লেষণ করে কীভাবে দ্রুত কাজগুলো চালু করা যাবে, সেভাবে করবো। এর জন্য সময় লাগবে। বর্তমানে আমরা মানুষকে কোনো সেবা দিতে পারছি না।

বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, প্রধান কার্যালয় ও মিরপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ফলে বিআরটিএর ৪ ধরনের সেবা অনির্দিষ্টকালের জন্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ সেবাগুলো হচ্ছে— ড্রাইভিং লাইসেন্স, রুট পারমিট, ফিটনেস সনদ ও গাড়ির নিবন্ধন প্রদান। এ ঘটনায় আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুই তদন্ত কমিটিকেই ৭ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। এরমধ্যে বিআরটিএর পুরো ক্ষতি নির্ণয়ে পরিচালক (অপারেশন) আজিজুল ইসলামকে প্রধান করে ৭ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। আর মিরপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের ক্ষতি নির্ণয়ে উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলামকে প্রধান করে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান সংক্রান্ত মিরপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে যে প্রকল্প চলছে ১৫০ কোটি টাকার সে প্রকল্পের যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম ও ই-সিস্টেমের ১০০ কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে বনানীর বিআরটিএর প্রধান কার্যালয়ে ৫০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। কার্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় তলার ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এমএইচএন/এসএম