সোয়া কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে হলমার্ক কেলেঙ্কারির অন্যতম হোতা এবং সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হুমায়ুন কবীর ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (২৪ জুলাই) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে ওই চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই দুদকের সহকারী পরিচালক এ কে এম মর্তুজা আলী সাগর আদালতে চার্জশিট দাখিল করবেন।

সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

২০২৩ সালের ১৪ মার্চ হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের মামলা দায়ের হয়েছিল। দুদক উপ-পরিচালক ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় ৪৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩৬৯ টাকা অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছিল। তদন্তে অবৈধ সম্পদের পাশাপাশি তার স্ত্রী মিসেস আয়েশা বেগম রিতাকেও সহযোগী আসামি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, আসামিদের বিরুদ্ধে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ১৩ লাখ ১৪ হাজার ৪৪০ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর বাইরে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ৯ লাখ ১৪ হাজার ২৩৩ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। সম্পদ অর্জনে সহায়তা করার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় রিতাকে সহযোগী ও সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি হুমায়ুন কবীরকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় চার্জশীট অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।

সোনালী ব্যাংকের শেরাটন শাখা থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে হলমার্ক গ্রুপ ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মে পর্যন্ত জালিয়াতির মাধ্যমে ২ হাজার ৯৬৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর অনুসন্ধানে নামে রাষ্ট্রীয় সংস্থা দুদক। অনুসন্ধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০১৪ সালে ফান্ডেড মোট ১ হাজার ৯৫৪ কোটি ৮৩ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৩৮টি মামলার চার্জশিট দেয় দুদক। ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর ফান্ডেড (সোনালী ব্যাংক থেকে সরাসরি ঋণ) ১ হাজার ৫৬৮ কোটি ৪৯ লাখ ৩৪ হাজার ৮৭৭ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২৭ জনকে আসামি করে ১১ মামলা এবং ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে ফান্ডেড প্রায় ৩৭২ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আরও ২৭ মামলা দায়ের করে দুদক।

পরে ফান্ডেড মোট ১ হাজার ৯৫৪ কোটি ৮৩ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৪ সালের বিভিন্ন সময়ে ৩৮ মামলার চার্জশিট দেয় সংস্থাটি। মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। যেখানে হলমার্ক গ্রুপের এমডি তানভীর মাহমুদ, তার স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, তানভীরের ভায়রা ও গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ এবং হলমার্ক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ও সোনালী ব্যাংকের তৎকালীন শীর্ষ কর্তাদের আসামি করা হয়। যা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ইতোমধ্যে ২০১২ সালে দায়ের করা একটি মামলায় আসামি মো. হুমায়ুন কবীরের ১৭ বছরের সাজা হয়েছে। 

আরএম/এসকেডি