কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার মেরিট অনুযায়ী চার্জশিট পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

বুধবার (২৪ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের পরিবারের মধ্যে আর্থিক সহায়তা প্রদানকালে এ কথা জানান তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মামলা হচ্ছে। এ আক্রমণ ছিল তাদের (আন্দোলনকারী) সুপরিকল্পিত। মামলা কখন হবে, কোথায় হবে সেটা সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাবে না। প্রতি ঘণ্টায়ই মামলা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা চার্জশিট পাওয়ার পর মামলার মেরিট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

মন্ত্রী বলেন, জামায়াত-বিএনপি একটি উদ্দেশ্য নিয়ে কোটা আন্দোলন নিয়ে সহিংসতায় জড়িয়েছে। আপিল বিভাগের রায়ের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘পাঁচ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধাদের যে কোটা, সেটাও কার্যকর হবে না, তার কারণ হলো আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সন্তানদের এরইমধ্যে ৩০ বছর পার হয়ে গেছে। কাজেই মুক্তিযোদ্ধার কোটা এখন কার্যকর হবে না। তারপরও কেন আন্দোলন? আন্দোলনের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। জামায়াত-বিএনপি একটা উদ্দেশ্য নিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’

‘এরইমধ্যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যথার্থভাবেই বলেছেন যে বিচার বিভাগ স্বাধীন। ২০১৮ সালের আন্দোলনের সময় আমরা কোটা বিলুপ্ত করে দিয়েছিলাম। তারপরে সংক্ষুব্ধ হয়ে দুজন আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা আবার চালু করতে হাইকোর্ট একটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন।’

মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের বলেছিলেন যে তোমরা ফিরে যাও, সবগুলোই আমরা আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করব। ছাত্ররা সেটা না মেনে আন্দোলনে নামেন। আমরা দেখলাম, আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। চরম ধৈর্যের সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা সেটা মোকাবিলা করেছে।’

‘আমরা এই আন্দোলনে নিষ্ঠুরতা দেখেছি, বর্বতরা দেখেছি, ধ্বংসলীলা দেখেছি। আমরা দেখেছি, সেতুভবন, বিটিভি ভবন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিটিভিতে শত বছরের আর্কাইভ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একটি অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, ওই অফিসের ওপরে ইন্টারনেটের ব্যবস্থাগুলোও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘স্বপ্নের মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসে আঘাত করা হয়েছে। একটার পর একটা থানায় তারা আঘাত করতে যাচ্ছিল, তখন আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি করেছে।’

‘পেছন থেকে এই আন্দোলনে কারা মদত দিয়েছিলেন, তা আপনারা নিশ্চই টের পেয়েছেন। সেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর দেশে পরিণত করার জন্য পেছন থেকে যারা আন্দোলনে বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়েছিল, ছাত্রদের বাদ দিয়ে তারা সামনে চলে এসেছে। এই আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য এখন সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে,’ যোগ করেন মন্ত্রী।

এমএম/এসএসএইচ