ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগে ‘কানেক্টেড উইদাউট ইন্টারনেট’ আর মোবাইল ডাটায় ‘কানেক্টিং’ বিড়ম্বনার কবলে পড়েছিল সারাদেশ। ফলে দীর্ঘ প্রায় ১২০ ঘণ্টারও (৫ দিন) বেশি সময় ইন্টারনেটের ব্যবহার করতে পারেনি সাধারণ মানুষজন। ফলে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন ছিল অনলাইনভিত্তিক কার্যক্রম এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা। দেশে ইন্টারনেট চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত এই প্রথম দেশজুড়ে এত দীর্ঘ সময় ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।

মূলত, সারা দেশে শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরেই এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। এই আন্দোলন ঘিরে গুজব ছড়ানো হচ্ছে এমন অভিযোগে মৌখিক নির্দেশে বন্ধ হয় মোবাইল ডাটা। এরপর বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) রাত ৯টা নাগাদ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সারাদেশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে।

মোবাইল ডাটা বন্ধের বিষয়ে সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতেই সাময়িকভাবে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বার্থান্বেষী মহলের নানা গুজব ছড়াচ্ছে। তারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতির তৈরি করতে চাচ্ছে। সেজন্য সাময়িকভাবে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মোবাইল ডাটা বন্ধের বিষয়ে আগে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি বুঝে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার দায় সরকার নেয়নি। এ বিষয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বলছে, মহাখালী ডাটা সেন্টারে সন্ত্রাসীদের অগ্নিসংযোগে সারাদেশে ইন্টারনেট সংযোগ ব্যাহত হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের ইন্টারনেট সংযোগের হেডকোয়ার্টার খ্যাত মহাখালীর খাজা টাওয়ারের নিচের অপটিক্যাল ফাইবারে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। যার ফলেই এমন অচলাবস্থা তৈরি হয়।

নাম পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে একটি আইএসপি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘কমপ্লিট শাট ডাউন’ কর্মসূচিকে ঘিরে দিনভর উত্তাল ছিল সারাদেশ। সেজন্য সরকার মোবাইল ডাটা বন্ধ করেছিলো। পরে মহাখালী খাজা টাওয়ার নিচের অপটিক্যাল ফাইবারে আগুন দেওয়া হয়েছে। তবে কে বা কারা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে তা জানা যায়নি।

সবশেষ মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাত ৯টা থেকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সচল হতে শুরু হয়েছে। যার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ইন্টারনেট ব্ল্যাক আউট থেকে মুক্ত হয়েছে দেশের মানুষ।

আরএইচটি/এমএ