সাধারণ শিক্ষার্থীরা কেউ মামলায় জড়িয়ে থাকলে তাদের তথ্য যদি কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা দেন, তাহলে সরকার তা অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে দেখবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

আনিসুল হক বলেন, শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং সব ছাত্রছাত্রীর নিরাপত্তার পরিবেশ তৈরি করবে সরকার। আন্দোলন চলাকালে সহিংসতায় সাধারণ শিক্ষার্থী যারা আহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে সরকার দেখভাল করবে। 

নিহতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এর আগে জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেছেন, তখন যারা মারা গিয়েছেন তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। আমরা এখনও সেই কথার ওপরই আছি।

সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার সংক্রান্ত বহুল প্রতীক্ষিত প্রজ্ঞাপন জারির ঘোষণা দেন আইনমন্ত্রী। আপিল বিভাগের রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‌‌‌ আপিল বিভাগের রায় প্রতিপালন করেছে সরকার। রায়ের একটা দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন পরিবর্তন করার ক্ষমতা নেই সরকারের। তারা যেভাবে দিয়েছেন সেভাবেই আমরা করেছি।

শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনে যেতে পারেন কি না জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, মূলত এটি ছিল সংস্কার চেয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলন। কোটা সংস্কার করা হয়েছে। এখন তাদের নিজ নিজ জায়গায় ফিরে গিয়ে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করা উচিত।

চলমান নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্ত কী তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট বলা আছে, এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। আশা করি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চলতি নিয়োগেও এই আদেশ অনুযায়ী কাজ করবে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল কোটা নিয়ে সংসদে আইন পাসের–এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে অতীতেও কখনোই আইন ছিল না। পরিপত্র-প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এটি সব সময় করা হয়।

মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের পাশাপাশি নাতি-পুতিদের কোটার আওতায় ধরা হবে কি না জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছেন, তার কোনো অংশ পরিবর্তন করার সুযোগ নেই।

নতুন করে আবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে কি না? প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, সমস্যা কেটেছে। সমাধান করে দিয়েছি। এইটুকু আশা করতে পারি, আর সমস্যা তৈরি করা হবে না এবং পরিস্থিতির অবনতি হবে না। যদি আইনশৃঙ্খলা অবনতি ঘটানোর চেষ্টা কোনো অপশক্তি করে, আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।

জেলা ও নারী কোটা বাদ গেল। আদালতের নির্দেশনা অনুসারে সরকার চাইলেই কোটা সংস্কার করতে পারত, কিন্তু না করার কারণ কী? প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, আদালত অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে সুদূরপ্রসারী একটি কথা বলে দিয়েছেন, সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যদি কোনো সময় মনে হয় এটি পরিবর্তন, বাতিল, কমানো বা শেষ করা জরুরি তাহলে তা করবে। এখনই তা কেন করা হচ্ছে না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এখন করলে আইনের শাসনের প্রতি মারাত্মক হুমকি হতো, এজন্য এটা আমরা করব না।

কারফিউ তুলে নেওয়া প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, জনজীবনে যখন স্বস্তি আসবে তখন কারফিউ তুলে নেওয়া হবে। এরই মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসছে, ফলে কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ছে। সরকার শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার পরিবেশ তৈরিতেও কাজ করছে। শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে যাবে।

এমএ