রাজধানীর শনিরআখড়ায় কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় রণক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। গভীর রাতেও সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। 

বুধবার (১৭ জুলাই) মধ্যরাতেও সড়কে আন্দোলনকারীদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।

এ দিন মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায় আগুন ধরিয়ে দেন। সড়ক অবরোধের ফলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আন্দোলনকারীরা যাত্রাবাড়ী থানায় হামলা চালান। পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।

সংঘর্ষের সময় শর্টগানের গুলিতে শিশুসহ অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন, সবজি বিক্রেতা মো. বাবলু (৪০), তার শিশু সন্তান রোহিত (২), মনিরুল ইসলাম (২০), ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাঞ্চারামপুরের মো. ইমরান বাবুর্চি (২৪), নবম শ্রেণির ছাত্র মাহিন আহমেদ পিয়াস (১৫) ও মো. সোহাগ (২৮)। এদিকে, হানিফ ফ্লাইওভারে সিয়াম নামের গুলিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন।

এ দিন রাত দেড়টার দিকে শনিরআখড়ার কাজলা থেকে রায়েরবাগ হয়ে সাইনবোর্ড পর্যন্ত সড়কে আন্দোলনকারীরা অবস্থান করছেন। যাত্রাবাড়ী থানার সামনে বিপুলসংখ্যক র‌্যাব, পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে শরিক হয়ে শনিরআখড়ার দনিয়া কলেজের শিক্ষার্থীসহ যাত্রাবাড়ীর স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বুধবার সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। তখন থেকে দেশের ব্যস্ত এই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 

সন্ধ্যার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পুলিশের শটগানের গুলিতে আহত ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। তখন থেকে শনির আখড়া থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত সড়কের চিত্র বদলে যেতে থাকে। আন্দোলনকারীরা মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের কাজলা অংশের টোল প্লাজায় আগুন ধরিয়ে দেন।

পরে ছত্রভঙ্গ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া দিলে আন্দোলনকারীরা পিছু হটেন। আবার তারা এক জোট হয়ে পাল্টা ধাওয়া দিতে থাকেন। এই পরিস্থিতির মধ্যে রাত ৯টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে বিপুলসংখ্যক র‌্যাব সদস্যকে সতর্ক অবস্থানে দেখা যায়।

আন্দোলনকারীরা অবস্থান নিয়েছেন কাজলা এলাকায়। আর পুলিশ যাত্রাবাড়ী থানার সামনে অবস্থান নিয়েছে।

যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, বিক্ষোভকারীরা এখনও সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। ফলে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তারা থানা ভবনেও ইটপাটকেল ছুঁড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে পুলিশ।

কেএ