সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্বঘোষিত গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (১৭ জুলাই) বিকেল ৪টা ৫মিনিটে ভিসি চত্বরে দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে এ গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা কফিন ধরে শপথ করে বলেন, এই আন্দোলন আমরা বৃথা যেতে দেব না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই আন্দোলন থেকে সরে যাব না। 

কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে নিহতদের শহীদ আখ্যা দিয়ে তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, আজকে নতুন দিনের সূর্য উদয় হয়েছে। আমরা আজ ছাত্রলীগকে এই ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করেছি। 

প্রসঙ্গত, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন গতকাল মঙ্গলবার বেশ সহিংস রূপ নেয়। এদিন ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে ৬ জন মারা যান। আহত হন কয়েকশ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

এ অবস্থায় মঙ্গলবারই সারা দেশের স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আজ বুধবার বন্ধ ঘোষণা করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। তবে ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হল ও ক্যাম্পাস ত্যাগ না করার ঘোষণা দিয়েছেন। ঢাবির হলগুলোর ভেতরে অবস্থান করছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বেশিরভাগ হল থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বের করে দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা প্রসঙ্গে কথা বলার সময় মন্তব্য করেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’

প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তারা ধরে নিয়েছেন ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ তাদেরকেই বলা হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে রোববার মধ্যরাত থেকে আন্দোলনে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সেই আন্দোলন এখনো চলছে। আজ বুধবারও ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকাসহ ৬ জেলায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

এনএম/জেইউ/এসকেডি