সরকারি চাকরিতে ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের আন্দোলন শুরু করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বক্তব্যের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেন। 

সোমবার (১৫ জুলাই) বিকেল ৩টার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সমাবেশে মিলিত হওয়ার কথা রয়েছে। 

বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা- ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘কে রাজাকার কে রাজাকার, তুই রাজাকার তুই রাজাকার’, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, রাষ্ট্র কারো বাপের না’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘আমার স্বাধীন বাংলায়, একের কথা চলে না’, ‘তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি’, ‘লাখো শহীদের রক্তে কেনা , দেশটা কারো বাপের না’ অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, হামলা/মামলা দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছিলাম। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর করা বক্তব্য শিক্ষার্থীদের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনি বাদে সবাইকে রাজাকারের নাতি-নাতনি বলে আখ্যায়িত করেছেন, যা অত্যন্ত অপমানজনক। আমরা এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই এবং এই বক্তব্য দ্রুত এক্সপাঞ্জ করার দাবি জানাই। 

আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে কোটা সংস্কারের এক দফা নিয়ে আন্দোলন করছি। কিন্তু আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে না। আমরা ক্লান্ত হইনি। আমরা আমাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে যাবো। প্রয়োজনে আরও কঠোর আন্দোলনেদিকে আমরা অগ্রসর হবো। 

সারজিস আলম বলেন, আপনারা সাধারণ শিক্ষার্থীরা যদি আমাদের সঙ্গে থাকেন কোনো বাধাই আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। ইতিমধ্যেই দেশের প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য কলেজগুলো আন্দোলন শুরু করেছে। 

তিনি বলেন, ৫৬ শতাংশ কোটা কোনো যৌক্তিক সমাধান নয়, এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে যায় না। আমাদের উদ্দেশ্য একটাই কোটার যৌক্তিক সংস্কার। তাই দ্রুত জরুরি অধিবেশন ডেকে এই কোটার যৌক্তিক সমাধান করুন। 

এর আগে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাবি, বুয়েট, ঢামেক, জবি, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নিতে শুরু করেন। 

কেএইচ/আরএইচটি/জেডএস