চীনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সফর প্রসঙ্গে ভারতীয় পত্রিকা ইকোনমিক টাইমসের ‘আপসেট শেখ হাসিনা, রিটার্ন ফ্রম চায়না’ শীর্ষক প্রতিবেদন এবং দেশে এ নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পৃথিবীর বহু দেশে যখন আমি যাই, আমি যত তাড়াতাড়ি পারি দেশে চলে আসি। কাজ শেষ হয়ে গেলে আমার তো শপিংয়েও যাওয়ার প্রয়োজন নাই, দেখারও জায়গা নাই, বেড়ানোরও কিছু নাই। বহুবার আমি এভাবে এসেছি। এগুলোকে এত রং-চং মাখিয়ে এত কিছু বলার তো কিছু নাই। আমি শুধু বলব যারা এসব বানোয়াট কথা বলে, তাদের যেন দেশবাসী চিনে রাখে।

রোববার (১৪ জুলাই) বিকেল গণভবনে চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সফর শেষের আগেই দেশে ফেরা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদন ও সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের গণমাধ্যমের কথা শুনে আমাদের এখানে যারা কথা বলেন, তারাই তো দু’দিন আগে বলেছে ভারতের কাছে আমরা সব বিক্রি করে দিয়ে এসেছি। অসম চুক্তি করে এসেছি, দেশ বিক্রির চুক্তি করে এসেছি, তাদের কথা আসলে কোনটা ঠিক?

শেখ হাসিনা বলেন, সফরে আমার মেয়েকেও তাদের (চীনের) হেলথ মিনিস্ট্রি থেকে দাওয়াত দিয়েছিল। সে অনুযায়ী সে এসেছিল। সেখানে তার সকাল বেলা যাওয়ার কথা কিন্তু তার প্রচণ্ড জ্বর থাকায় আমার সঙ্গে যেতে পারেনি, এটা বাস্তবতা। আমি একটা মা, ওই অবস্থায় রেখেই আমাকে চলে যেতে হয়। সব কার্যক্রম শেষে আমাদের ১১ তারিখ বিকেলে আসার কথা, সেখানে আমরা সকালে চলে এসেছি। মাত্র ছয় ঘণ্টার পার্থক্য। এই ছয় ঘণ্টার মধ্যেই এত বড় তোলপাড় হয়ে যাবে, এটা তো বুঝতে পারিনি।

তিনি বলেন, এসব সমালোচনা আজ নতুন না। এর আগে যখন ভারতে গেলাম, আমার তিন বা চার দিনের প্রোগ্রাম ছিল। এরপর যখন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশে আসবেন, তখন আমার দায়িত্ব ছিল উনি আসার আগেই আমার বাংলাদেশে এসে পৌঁছানো এবং তাকে রিসিভ করা। আমি তখন ভারতে দুই দিনের প্রোগ্রাম ক্যান্সেল করে বাংলাদেশে চলে এলাম। আমি যত তাড়াতাড়ি পারি দেশে চলে আসি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে আসার পর প্রতিটি ক্ষেত্রেই এসব নেগেটিভ কথা শুনে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। সবসময় আমার বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো, নানা ধরনের কথা বলা, বলতে বলতে তারা এখন এত বেশি বলে যে তাদের বলায় এখন আর আমার কিছু আসে যায় না। যারা বলছে তাদের বলতে দিন। চীন কেন, এর আগে আমি ভারতে গেলাম, তখন বলা হয়েছে ভারতের কাছে আমি দেশ বিক্রি করে দিয়েছি। এরপর চীনে গেলাম, এখন বলে তারা আমাদের কিছুই দেয়নি। এগুলো তারা সবসময় বলেই আসছে। ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করা, অসম চুক্তি স্বাক্ষর করা, এগুলো বলা– এটা তো একটা শ্রেণির লোকের এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা আমি মনে করি। মানসিক অসুস্থতা ছাড়া এভাবে বানোয়াট কথা কেউ বলতে পারে না। তাদের প্রতি আমার করুণাই হয়।

টিআই/এসএসএইচ