বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, টেলিযোগাযোগ সেবার বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান না করেই কলড্রপের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি টেলিকম অপারেটরদের ওপর দায় চাপাচ্ছে। অথচ কলড্রপ সমস্যা সমাধানে দীর্ঘদিন ধরে সামগ্রিক টেলিকম খাতের যে সমন্বয়ের প্রয়োজন ছিল সেটি সরকারি এ সংস্থা কৌশলে এড়িয়ে যাচ্ছে।

শনিবার (১৩ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, কলড্রপ সমস্যার জন্য বিটিআরসি দায় এড়াতে পারে না। কথা বলার ক্ষেত্রে কলড্রপ শুধু আর্থিক ক্ষতিই করে না, বরং এ সমস্যা দুই প্রান্তে থাকা দুই ব্যক্তির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করে। গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার ক্ষেত্রে কলড্রপ অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট সব ধরনের কলড্রপের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। সেবাদানের সঙ্গে যুক্ত সব প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার নির্দেশনাও প্রদান করেন। বিটিআরসির নিজস্ব প্রতিবেদন বলছে, বছরে ১৮ দশমিক ৫০ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে কলড্রপের কারণে। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ডাক, টেলিযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এ ব্যাপারে বিটিআরসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেন। দুদিন পর বিটিআরসি গ্রামীণফোনকে শোকজ লেটার  দেয়। পরে গ্রামীণফোন লিমিটেডের জবাব দেওয়ার আগেই রবি ও বাংলালিংককে ফের শোকজ লেটার দেওয়া হয়।

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, বিটিআরসি দীর্ঘদিন ধরে কলড্রপ সমস্যার সামাধান না করে শোকজ করে দায় এড়িয়ে যাচ্ছে। বিটিআরসি টেলিকম অপারেটরদের কাঁধে বন্দুক রেখে সমস্যা সমাধানের দিকে যেভাবে গুলি ছুড়ছে তাতে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শুধু স্পেকট্রাম দিলেই টেলিযোগাযোগ সেবা দেওয়া হয় না উল্লেখ করে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মেবাইল অপারেটরদের নেটওয়ার্ক ছাড়াও কল ডেটা ট্রান্সমিশনের জন্য আইজিডব্লিউ ও আইসিএক্স, ফাইবার ট্রান্সমিশন বা এনটিটিএন এবং টাওয়ার কোম্পানিগুলোর বড় ভূমিকা রয়েছে। আমাদের দেশে টাওয়ার স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা না পাওয়া বা নতুন সাইটের অনুমোদন না পাওয়ার সমস্যা রয়েছে। আবার স্টেকহোল্ডাররা বলছেন, দেশে ৬৫ শতাংশ ফাইবার ওভারহেড রয়েছে। এসব ওভারহেড ফাইবার সামান্য কারণেই কাটা যাচ্ছে। আবার ব্যান্ডউইথ স্লো দেওয়া হচ্ছে যার মান যাচাইয়ের জন্য পরিমাপক যন্ত্র খোদ বিটিআরসির কাছেই নেই। তাই কলড্রপসহ টেলিযোগাযোগ খাতের অন্যান্য সমস্যা সমাধানে বিটিআরসিকে আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আরএইচটি/এসএসএইচ