চট্টগ্রাম নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারে আলোচিত মো. সাহেদ হোসেন মনা (২৮) হত্যাকাণ্ডে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানার চৈঠপুর এলাকায় নগরের কোতোয়ালি থানার একটি টিম সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তাররা হলেন– মো. জুয়েল (৩৪), মো. বশির (২৬), মো. সাগর (২৮) ও মো. জুয়েল ওরফে ছোট জুয়েল (২৫)।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারদের মো. জুয়েল গ্যাং লিডার। তিনি যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ও একাধিক ব্যক্তি খুনের মামলার আসামি হেলাল আকবর বাবর চৌধুরীর অনুসারী। জুয়েলের গ্যাংয়ে অন্তত ৫০ জন রয়েছে। যারা রিয়াজউদ্দিন বাজার, নিউমার্কেট ও রেলস্টেশন এলাকায় নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকেন। তারা পথচারীদের কাছ থেকে চুরি থেকে ছিনতাই, রিয়াজউদ্দিন বাজারের দোকানে চাঁদাবাজিতে জড়িত।

আবার খুন হওয়া সাহেদ হোসেন মনাও গ্যাং লিডার ছিলেন। তিনি নিজেও পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ছিলেন। রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় মনার নেতৃত্বাধীন গ্রুপও অন্ধকার জগতে বিচরণ করতেন। মনা নিজেও বাবরের অনুসারী ছিলেন। ২০২৩ সালের ৯ জুলাই দিনদুপুরে রিয়াজউদ্দিন বাজারের রয়েল টাওয়ারের সামনে প্রায় ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছিলেন তিনি। এরপর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলে মনার সাম্রাজ্যে হানা দেয় জুয়েল। জেল থেকে বের হওয়ার পর থেকে মনা ও জুয়েলের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।

চার আসামিকে গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার (১২ জুলাই) চট্টগ্রাম নগর পুলিশের দক্ষিণ জোনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ওই জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনার আগে জুয়েলের পরিচিত কালুর দোকান ভাঙচুর করেন মনা। এটি নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে ৭ জুলাই রাতে ৯টায় মনা নুপুর মার্কেট পাখি গলিতে এলে জুয়েলের নেতৃত্বে কয়েকজন তার ওপর হামলা করে। তারা মনাকে এলোপাথাড়ি মারধর ও ছুরিকাঘাত করে মেরে ফেলেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মনার বাবা শাহ আলম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছিল। তবে মূলহোতারা ঘটনার পরপরই ভারতে পালানোর জন্য হবিগঞ্জে চলে যায়। সেখান থেকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। মূলত রেলস্টেশন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে খুন হয়েছেন মনা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক রিয়াজউদ্দিন বাজারেই কোটি কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য হয়। এর মধ্যে রয়েছে সোনা চোরাচালান, চোরাই মোবাইল, বিদেশি মুদ্রার ব্যবসা। এসব অবৈধ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর বাবর একাধিক গ্রুপ লালনপালন করেন।

এমআর/এসএসএইচ