বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের ব্যানারে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে এখন পর্যন্ত সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে পুলিশ। ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির কারণে বুধবার (১০ জুলাই) দিনভর কার্যত অচল ছিল ঢাকা। আজও বিকেল থেকে অর্ধদিবস বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এমনকি দাবি না মানলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।  

এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকাল থেকে শুরু হয়েছে মাসিক ক্রাইম কনফারেন্স। এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। বৈঠকে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিত রয়েছেন।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলন থেকে কোটা সংস্কার আন্দেলনসহ চলমান নানা ইস্যু নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আসতে পারে বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএমপির এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, চলমান আন্দোলনের শুরু থেকেই পুলিশ সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে। আপিল বিভাগের দেওয়া কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারির পরও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখা হচ্ছে। ডিএমপি থেকে আজ আসতে পারে কঠোর সিদ্ধান্ত।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, সমসাময়িক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলন করবেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত)।

এর আগে, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শাহবাগে সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) বাংলা ব্লকেট কর্মসূচি হিসেবে বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সারা দেশের শিক্ষার্থীরা বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবে। সড়ক ও রেলপথগুলো এই কর্মসূচির আওতায় থাকবে। আমরা নির্বাহী বিভাগকে বলতে চাই, অতি দ্রুত আমাদের দাবিটি মেনে নিন, যাতে আমরা পড়ার টেবিলে বসতে পারি।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে যে পরিপত্র দেওয়া হয়েছিল হাইকোর্ট সেটি বাতিল করেছেন। আমরা এই আইনের প্রক্রিয়ায় হাইকোর্টের বারান্দায় যেতে চাই না। আমরা আমাদের রুটিন কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চাই। যতদিন না আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে, ততদিন পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমাদের যে এক দফা দাবি জানিয়েছি, সে ব্যাপারে সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য আসতে হবে। একটি কমিশন গঠন করে এই কোটা সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে।

কর্মসূচি অনুযায়ী আজ বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে জড়ো হবেন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিল নিয়ে শাহবাগ, বাংলা মোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মৎস্য ভবন, মিন্টু রোড, কাটাবন ও চানখারপুল অবরোধ করবেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

জেইউ/কেএ