এবার ফার্মগেট অবরোধ, বিজয় সরণি ও সংসদ এলাকায় যানচলাচল বন্ধ
আজও মিছিল নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছেন কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা। সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফার্মগেট মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার দুপুর ১২ টা ২০ মিনিটে ফার্মগেটে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর ফলে ফার্মগেট, বিজয় সরণি ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকার যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
এ ছাড়া, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতেও যানচলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে শত শত যাত্রীকে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওনা দিতে দেখা যায়।
আন্দোলন ঘিরে সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে পুলিশকে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ফার্মগেটে এখন পর্যন্ত বাংলা ব্লকেডের কর্মসূচি চলছে। তবে আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি না ঘটে।
আরও পড়ুন
এদিন সকাল ১০টার পর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে শাহবাগ, চানখারপুল, বাটা সিগন্যাল, মৎস্য ভবন, মিন্টু রোড, ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, বাংলামোটর পেরিয়ে কারওয়ান বাজার এবং ফার্মগেট অবরোধের কথা রয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সর্বাত্মক ‘বাংলা ব্লকেড’ অনুযায়ী আগামীকাল (বুধবার) সারাদিন দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থান অবরোধ করা হবে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানের পাশাপাশি হাইওয়ে এবং রেলপথও এই ব্লকেডের আওতায় থাকবে।
তিনি বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমাদের কর্মসূচি পালন করছি। এই আন্দোলনের ফলে জনসাধারণের যে ভোগান্তি হচ্ছে তার প্রতি আমরা সংবেদনশীল। কিন্তু এর দায়ভার সরকারকে বহন করতে হবে। কারণ এতদিনের আন্দোলনের পরেও তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি এবং বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেনি। আমরা চূড়ান্ত সমাধান চাই। আমরা চাই, অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম ৫ শতাংশে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে। যেন পরবর্তীতে এটি আবার সমস্যা হিসেবে সামনে না আসে।
কর্মসূচি ঘোষণা করে নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামীকাল (বুধবার) থেকে আমরা সকাল-সন্ধ্যা বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছি। বুধবার সকাল ১০টায় আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগ অবরোধ করব। এছাড়া সারা দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানেও এই অবরোধ পরিচালিত হবে। তাছাড়া দেশের গুরুত্বপূর্ণ হাইওয়ে এবং রেলপথও এই ব্লকেডের অন্তর্ভুক্ত হবে। আমাদের সব সমন্বয়কদের সব বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি সফল করার জন্য বলা হলো।
আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ১০ দিন ধরে আমাদের দাবি আদায়ে রাজপথে আন্দোলন করে এসেছি। আমাদের দাবিটি দেশের সব শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি ও অত্যন্ত যৌক্তিক হওয়ায় তা সবার মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। যদি সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে কমিশন গঠনের মাধ্যমে আমাদের দাবি মেনে নেয়, সেক্ষেত্রেই আমরা রাজপথ ছেড়ে ক্লাসরুমে ফিরে যাব। অন্যথায় আমাদের দাবি আদায়ে আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না।
এর আগে গত ৭ জুলাই ঘোষিত শিক্ষার্থীদের বর্তমান এক দফা দাবি হলো– সব গ্রেডে সব প্রকার অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে।
ওএফএ/এমজে