সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোটা প্রথা বাতিলের সিদ্ধান্ত ছাড়া অন্য কোনো চিন্তা করছেন না আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তাই ‘দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক’ এমন স্লোগান দিয়ে বুধবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে দশটায় রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় অবরোধ করেছেন তারা। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক অবরোধ করার ফলে বন্ধ হয়ে গেছে ধানমন্ডি, শাহবাগ, মিরপুর রোডের সব ধরনের যান চলাচল। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এই এলাকার মানুষজন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, সরকার আদালতের মাধ্যমে কোটা ব্যবস্থাকে পুনর্বহাল করার অপচেষ্টা করছে। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেটি রুখে দিয়েছে। সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে এত বেশি কোটার দৃষ্টান্ত পৃথিবীর আন্য কোন দেশে নেই। সেজন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি একটাই। সেটি হচ্ছে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে। আর যদি রাখতেই হয় তাহলে সব মিলিয়ে ৫ শতাংশের বেশি কোটা রাখা যাবে না। আজকের শুনানির সময়ও আদালতকে জনমানুষের এই মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে। কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি শ্রেণিকে যুগের পর যুগ বেশি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। তাই কোটা ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে।

ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী শাহিনুর সুমি বলেন, কোটা বাতিলে দাবিতে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা এক হয়েছে। আমরা সফল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন কোটা বহাল রাখা চলবে না।

অপরদিকে ৩০ শতাংশ কোটা বহাল রাখার দাবিতে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশ করছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা। সকাল সাড়ে দশটার মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও শহীদ সন্তান-৭১ এর ব্যানারে তারা সমাবেশ করেন।

সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনে মুক্তিযুদ্ধ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হচ্ছে। যারা অবমাননা করছে তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। ১৮ সালের যে অবৈধ পরিপত্র ইতোমধ্যে হাইকোর্ট বাতিল করেছে, সেটা বাতিল করে নতুন পরিপত্র জারি করতে হবে। নতুন পরিপত্রে সবক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখতে হবে।

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আ.ক. ম. জামাল উদ্দিন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানেরা কয়েক বছর ছাড়া কোনো সুযোগ সুবিধা পাননি। এখন হাইকোর্ট যে পরিপত্র বাতিল করেছেন, সেটার জন্য হাইকোর্টকে ধন্যবাদ জানাই। এখন নতুনভাবে রিট হয়েছে। দাবি উঠেছে সংস্কারের। আমরা বলতে চাই ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রেখে যা ইচ্ছা সংস্কার করা হোক, তাতে আমাদের আপত্তি নেই।

আরএইচটি/জেডএস