ছবি : সংগৃহীত

প্রতিদিন জাতীয় দৈনিকে অসংখ্য খবর প্রকাশিত হয়। সেইসব খবর থেকে আলোচিত কিছু খবরের সংকলন করা হলো।

রেলওয়ের একটি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গত সোমবার গ্রেপ্তার হওয়া ১৭ জনের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) কর্মকর্তা-কর্মচারী ছয়জন। এর মধ্যে পাঁচজন এখনো কর্মরত। আরেকজনকে ১০ বছর আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল।

যে পাঁচজন এখন কর্মরত রয়েছেন, তাঁদের সবার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। এর মধ্যে তিনজনের ক্ষেত্রে অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছিল পিএসসি। যে কারণে একজনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। একজনকে ঢাকার প্রধান কার্যালয় থেকে সিলেটে বদলি করা হয়। আরেকজনকে বরখাস্ত করা হলেও আইনি প্রক্রিয়ায় তিনি দায়িত্ব ফিরে পান।

এর পাশাপাশি অন্যান্য খবরগুলো দেখে আসি—

প্রথম আলো

চাকরির প্রশ্নপত্র ফাঁসে তাঁরা জড়িত, জানত পিএসসি

গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিভিন্ন সময় পিএসসির নিজস্ব অনুসন্ধান ও তদন্তেই তা বেরিয়ে এসেছে। পিএসসির ভেতরেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের একটি চক্র কাজ করছে। এর মধ্যে কেউ ধরা পড়েছেন, কেউ এখনো আড়ালে রয়ে গেছেন। বিভিন্ন সময়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক সংস্থা পিএসসি কেন ফৌজদারি মামলা করেনি, সেই প্রশ্নও তুলেছেন জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা।

গ্রেপ্তার হওয়া ১৭ জনের বিষয়ে আদালতে জমা দেওয়া সিআইডির প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিরা ৫ জুলাই পিএসসির অধীনে নেওয়া বাংলাদেশ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী (নন–ক্যাডার) পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন। নিয়োগ প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন এবং প্রশ্নের উত্তর বিতরণ করেছেন তাঁরা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছেন, বিগত বছরগুলোতেও বিভিন্ন সময়ে বিসিএসসহ পিএসসির বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে তাঁরা জড়িত ছিলেন।

কালবেলা

বিশ্বমানের ল্যাব প্রকল্পে দেশি মানের দুর্নীতি

রাজধানীর শ্যামপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউস। রপ্তানির আগে কাঁচা পণ্যের মান যাচাই ও প্যাকিং সেবা দেয় প্রতিষ্ঠানটি। যথাযথ মান যাচাইয়ের জন্য এখানে আছে একটি ল্যাবরেটরি। ২০২১ সালে এই ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয় সরকার। এজন্য নেওয়া হয় একটি প্রকল্প।

নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, প্রকল্পের আওতায় শ্যামপুরের কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউসে ছয়তলা একটি ভবন নির্মাণের কথা রয়েছে। এই ভবন নির্মাণের ঠিকাদারির কাজ পায় মাল্টিব্রিজ নামের একটি কোম্পানি। ভবনের জন্য মোট ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ের চুক্তি থাকলেও এর মধ্যে ১২ কোটি টাকা রয়েছে পূর্ত-সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য। বাকি টাকা বিভিন্ন আসবাব এবং সাজসজ্জার জন্য রাখা হয়েছে।

কালের কণ্ঠ

খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্যে দিশাহারা ভোক্তা

কয়েক বছর ধরেই খাদ্যপণ্যের দাম লাগামছাড়া। এক অর্থবছরেই পেঁয়াজ, চাল, রসুন, আলু ও এলাচ—এই পাঁচ পণ্যের দাম সর্বোচ্চ ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। সে তুলনায় সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। খাদ্যপণ্যের এই উচ্চমূল্যে দিশাহারা সাধারণ ভোক্তা।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, গত জুনে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৪২ শতাংশ। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, বর্তমানে প্রকৃত মূল্যস্ফীতি বিবিএসের তথ্যের চেয়ে বেশি। গত ৯ মে বিআইডিএসের সম্মেলনকক্ষে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৫ শতাংশ হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন। তিনি বলেন, ‘বাড়তি এই মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ অসুবিধায় রয়েছে।

বণিক বার্তা

বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন নামেই, বাস্তবে সরকারের নিয়ন্ত্রণে

রাষ্ট্রপতির আদেশ নং ১২৭-এর (বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ ১৯৭২) বলে ১৯৭২ সালে পরিপূর্ণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে যাত্রা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। শুরু থেকেই দেশের আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বিবেচিত স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে। যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এক পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন নামেই, বাস্তবে এটি সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি প্রতিষ্ঠান।’

এর মধ্যে ধারা ১০ অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা গভর্নরের ওপর ন্যস্ত। আর সরকার চার বছরের জন্য যে কাউকে গভর্নর নিযুক্ত করতে পারেন। মেয়াদ শেষে তার পুনর্নিয়োগের সুযোগও আছে। আর আদেশের ১৫ (১) ধারায় বলা হয়েছে, গভর্নর বা ডেপুটি গভর্নর যদি এমন কোনো কাজ করে থাকেন, যাতে তার ওপর প্রদত্ত আস্থা লঙ্ঘিত হয় অথবা যদি তার স্বীয় পদে বহাল থাকাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বার্থের পরিপন্থী হিসেবে বিবেচনা করা যায়, তাহলে সরকার তাকে অপসারণ করতে পারবে।

সমকাল

চক্রের ‘গুরু’ আবেদকে প্রশ্ন দিতেন সাজেদুল

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত চক্রের ‘গুরু’ ছিলেন চাকরিচ্যুত গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী। তিনি না থাকলেও প্রতিষ্ঠানটিতে ছিল তাঁর কয়েক শিষ্য। তাদের মধ্যে অন্যতম পিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম। ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমানকে নিয়ে প্রশ্নপত্র সংগ্রহের পর তিনি দিতেন গুরুকে।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এক যুগ ধরে চক্রটি বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে আসছে। এর সঙ্গে বিজি প্রেসকেন্দ্রিক একটি দল জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রশ্নপত্র হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জারে দেওয়া হতো না; বরং পরীক্ষার আগের রাতে চুক্তিবদ্ধ পরীক্ষার্থীদের নেওয়া হতো গোপন আস্তানায়। ৫ জুলাই রেলের নিয়োগ পরীক্ষার আগের রাতেও ঢাকার চারটি স্থানে প্রায় ২০০ পরীক্ষার্থীকে নেওয়া হয়।

মানবজমিন

চট্টগ্রামে পুলিশ কর্মকর্তা স্ত্রীকে কিনে দেন ৫ জাহাজ

মোহাম্মদ কামরুল হাসান। ১৯৮৯ সালের ১০ই জানুয়ারি পুলিশে  উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিসেবে যোগ দেয়া এই কর্মকর্তা এখন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত   উপ-কমিশনার (ক্রাইম)। এরমধ্যে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।

জানা যায়, পুলিশে ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি পেয়ে চট্টগ্রামের ৮টি থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপালন করেন নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা কামরুল হাসান। মূলত ওই সময়েই বিপুল বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়ে ওঠেন কামরুল। এরমধ্যে নিজের ও স্ত্রীর নামে করা ১৯ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির বিষয় প্রকাশ্যে এসেছে।

দুদকের অনুসন্ধানে কামরুল হাসানের ১২ কোটি ৭২ লাখ ৯২ হাজার ৬৯৫ টাকার স্থাবর ও ১ কোটি ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ২১৬ টাকার অস্থাবর  সম্পত্তি থাকার তথ্য উঠে এসেছে।

কালবেলা

ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী থেকে ভূমিদস্যু নাজিমুদ্দিন

তার বেশভূষা দেখলে যে কেউ মনে করবে মস্ত বড় আলেম। স্থানীয়দের কাছে নিজেকে পরিচয়ও দেন মাওলানা হিসেবে। সবসময় থাকেন ধর্মীয় লেবাসে। জ্ঞানগর্ভ আলোচনাও করেন কখনো-কখনো। তবে বাস্তবজীবনে ঠিক উল্টো। দুই ডজন মামলার আসামি কথিত এই মাওলানা।

স্থানীয়রা জানান, নাজিমুদ্দিন এক পর্যায়ে নিজেকে গুলশান আজাদ ইউনিট আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পরিচয় দেওয়া শুরু করেন। এরপর নাজিমুদ্দিনকে চেনেন না এবং তিনি গুলশান আজাদ ইউনিট আওয়ামী লীগের কমিটিতে নেই জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। গত বছরের ১৪ নভেম্বর গুলশান আজাদ ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজি মো. সাহিবুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক মো. আরিদুল ইসলাম যৌথ স্বাক্ষরে এই বিজ্ঞপ্তি দেন।

আজকের পত্রিকা

ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই: এনআইডির তথ্যভান্ডারে ‘অস্বাভাবিক’ চাপ

জাতীয় তথ্য ভান্ডার থেকে সরকারি সংস্থাগুলোর তথ্য যাচাই অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। শুধু চলতি বছরের মার্চ মাসেই এসব সংস্থা প্রায় সাড়ে চার লাখ লোকের তথ্য যাচাই করেছে। এ সংখ্যাকে ‘অত্যধিক ও অস্বাভাবিক’ বলছে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ।

দেশের মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং টেলিফোনে যোগাযোগের যাবতীয় তথ্যের ভান্ডার হলো এনটিএমসি। দেশের সব আইন প্রয়োগকারী, তদন্ত ও গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা এনটিএমসি থেকে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী তথ্য নিয়ে থাকে। এসব তথ্য সরবরাহের জন্য ‘ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম বা এনআইপি’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে।

কালবেলা

হরিজনদের বরাদ্দকৃত বাসায় ওঠাতে পুলিশ চেয়ে চিঠি

মিরনজিল্লা কলোনিতে পরিচ্ছন্নকর্মীদের বরাদ্দপ্রাপ্ত বাসায় উঠিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশ চেয়ে চিঠি দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এ কলোনিতে নির্মিত ১নং ভবনে ৬ জন মুসলমান এবং ২ ও ৩নং ভবনে ৬০ জন হিন্দু (হরিজন) সম্প্রদায়ের পরিচ্ছন্নকর্মীর জন্য বাসা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এই চিঠি নিয়ে মিরনজিল্লা কলোনিতে হরিজন সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবি, হরিজন সম্প্রদায়ের পুনর্বাসন একসঙ্গে করতে হবে। হরিজন সম্প্রদায়ের পুনর্বাসন নিয়ে আজ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের কথা ছিল হরিজন সেবক সমিতির। কিন্তু এখন সেখানে না করে বংশাল হরিজন পল্লিতে সংবাদ সম্মেলন করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

প্রথম আলো

২১ বছরে ২০ পুলিশ হত্যা, রায় মাত্র তিনটির

২০১০ সালের ১৯ এপ্রিল মাঝরাত! কর্মস্থল রাজধানীর বংশাল থানা থেকে পুরান ঢাকার ওয়ারীর বাসায় ফিরছিলেন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) গৌতম রায়। পথে ধোলাইখালে সন্দেহজনক গতিবিধি দেখে তিনজনকে তিনি তল্লাশি করতে যান। তাঁদের একজন গৌতমের বুকের বাঁ পাশে ও কোমরের পেছনে গুলি করেন। ঘটনাস্থলেই মারা যান গৌতম। পরিবারের দাবি, এটি ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

এই খুনের পর ১৪ বছর পেরিয়ে গেছে। এখনো শেষ হয়নি মামলার বিচার। অভিযোগ গঠনের পর ৪৭ সাক্ষীর মাত্র ১৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। শুধু গৌতম রায়ই নন, গত ২১ বছরে রাজধানীতে অন্তত ২০ পুলিশ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে মোট ১৮টি। এর মধ্যে মাত্র ৩টি মামলার রায় হয়েছে। তদন্তাধীন আছে দুটি। তিনটি মামলার কার্যক্রম উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। বাকিগুলো বিচারাধীন।

এছাড়া বাংলাদেশে বিনিয়োগের এখন উপযুক্ত সময়; প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সবাই কোটিপতি; শিল্প খাতে সংকট গভীর হচ্ছে; সিলেটে এক মাস ধরে সাড়ে ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি; অচল ডেমু খাচ্ছে কোটি টাকা; প্রশ্নফাঁসে সম্পদের পাহাড় আবেদ আলী চক্রের; সিএমপির এডিসি কামরুল ও তাঁর স্ত্রীর সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ—সংবাদগুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।