সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে নজিরবিহীন আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। একদফা দাবিতে দুই দিনের কয়েকঘণ্টার ‘বাংলা ব্লকেডে’ ঢাকাসহ দেশের অনেক স্থানে অচলাবস্থা তৈরি হয়। দাবি আদায় না হলে আগামীকাল বুধবার থেকে সারা দেশে আবার সর্বাত্মক ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

এ অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে সরকার একটা সমাধানের পথে যেতে চাইছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। কীভাবে শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত দাবি পর্যালোচনা করে একটি সঠিক সিদ্ধান্তে আসা যায় তা নিয়ে জোর তৎপরতা চলছে।

গতকাল সোমবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের চার মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। সেখানে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন্নাহার চাপা ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া অংশ নেন।

বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা নিয়ে আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে ৭ জন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রিট করেন। বিষয়টা সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন তাই রায় না হওয়া পর্যন্ত মন্তব্য করা ঠিক হবে না। আদালত কোটা বাতিলের পরিপত্র বাতিল করেছেন, তবে সরকারের পক্ষ থেকে ফের আপিল করা হয়েছে।

প্রথমে আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর ক্ষমতাসীন দলের এখনকার অবস্থান কিছুটা ‘সমাধানমুখী’ বলে মনে করছেন অনেকে। সেই সমাধান আদালতের মাধ্যমেই আসতে পারে বা নিয়ে আসা হতে পারে বলে জানা গেছে।

সরকার ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া একটি সূত্র ঢাকা পোস্টে জানিয়েছে, আজই আদালতের মাধ্যমে কোটার বিষয়ে একটি সমাধান আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য দুই শিক্ষার্থী হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে নতুন করে আবেদন করেছেন।

আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতিফলন হতে পারে বলে সূত্রটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, কোর্ট যদি ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল না করে তাহলে আমরা আলোচনা সাপেক্ষে ঘোষিত কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। বিষয়টি নিয়ে আমরা আমাদের আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসব। আদালতের সিদ্ধান্ত ও আমাদের দাবির সামঞ্জস্য বিবেচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।

আরএইচটি/কেএইচ/এমএ