সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলে এক দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে কোটা বাতিলের আদেশ না হলে আগামীকালও (মঙ্গলবার) সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করার হুঁশিয়ারি দেন তারা। 

সোমবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে এমন ঘোষণা দিয়ে সায়েন্সল্যাব মোড়ের অবরোধ তুলে নেন তারা।

এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। যেকোনো মূল্যে কোটা বাতিলের আদেশ দিতে হবে। অন্যথায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান থাকবে। এই সময়ের মধ্যে যদি কোটা বাতিলের আদেশ দেওয়া না হয়, তাহলে ফের আগামীকাল অবরোধ করা হবে।

ঢাকা কলেজের স্নাতকোত্তর শ্রেণীর শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, এখন পর্যন্ত সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে এই বিষয়ে কোনো ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি। আমরা প্রত্যাশা করি, অবিলম্বে এই বিষয়ে দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত আসবে। ছাত্র সমাজের দাবি একটাই, অবিলম্বে যেন কোটা প্রত্যাহার করা হয়। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে পর্যালোচনা করে আরও বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করব।

এদিকে, শিক্ষার্থীরা অবরোধ ছেড়ে দেওয়ার পর মিরপুর সড়কে যানচলাচল শুরু হয়েছে। এর আগে, দুপুর ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে শিক্ষার্থীরা এসে সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেছিলেন। এরপর থেকে প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টারও বেশি সময় পুরো এলাকার যান চলাচল বন্ধ ছিল।

প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।

সেই দিন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছিলেন, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে, না কি বাতিল হবে এ বিষয়ে আপিল বিভাগই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

পরে গত বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেন।

এর আগে, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

আরএইচটি/কেএ