কেনাকাটায় সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আজিমপুরের মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকসহ ১৮ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ৩ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার (৭ জুলাই) কমিশনের অনুমোদনক্রমে আদালতে তিন মামলার চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকার। 

দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- আজিমপুর মাতৃসদন হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. ইসরাত জাহান, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকার সাবেক অধ্যক্ষ ডা. পারভীন হক চৌধুরী, মাতৃসদন ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সাবেক সিনিয়র কনসালটেন্ট (অক্স/গাইনি) ডা. রওশন হোসনে জাহান, সাবেক সহকারী কো-অর্ডিনেটর (ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ) ডা. মো. লুৎফুল কবীর খান, আজিমপুর জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের সাবেক মেডিকেল অফিসার ডা. রওশন জাহান, সিনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. মো. আমীর হোচাইন, সাবেক সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দন, সাবেক সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোছা. রইছা খাতুন, আজিমপুর মাতৃসদনের সাবেক জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মাহফুজা খাতুন, সাবেক সহকারী কো-অর্ডিনেটর ডা. চিন্ময় কান্তি দাস, জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সাবেক মেডিকেল অফিসার ডা. সাইফুল ইসলাম, আজিমপুর মাতৃসদনের মেডিকেল অফিসার (শিশু) ডা. বেগম মাহফুজা, দিলারা আকতার, ডা. নাজরীনা বেগম, সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. নাদিরা আফরোজ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সাবেক ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. নাছের উদ্দিন, সাবেক সমাজ সেবা কর্মকর্তা বিলকিস আক্তার এবং সাবেক মেডিকেল অফিসার (সনোলজিস্ট/ইমেজিং) ডা. আলেয়া ফেরদৌসি।

এছাড়া চার্জশিটভুক্ত তিন ঠিকাদার হলেন- মনার্ক এস্টাবলিশমেন্টের মালিক মো. ফাতে নূর ইসলাম, নাফিসা বিজনেস কর্নারের স্বত্বাধিকারী শেখ ইদ্রিস উদ্দিন (চঞ্চল) এবং সান্ত্বনা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নিজামুর রহমান চৌধুরী।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মেডিসিন অ্যান্ড ইকুইপমেন্ট টেন্ডারের মাধ্যমে ক্রয়ের ক্ষেত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন। সেখানে বর্তমান বাজারদর আমলে না নিয়ে গঠিত বাজার কমিটির মনগড়া ও ভিত্তিহীন দরকে বিবেচনায় নিয়ে এমআরপি ওয়েবসাইটের উত্তরপত্র মূল্যায়নের মাধ্যমে মালামাল ক্রয় করেছেন। এর মাধ্যমে তারা মোট ৩ কোটি ৬৩ লাখ ৭৯ হাজার ৫২৩ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর পৃথক চারটি মামলা করে দুদক। ওই মামলাগুলোতে মোট ৪ কোটি ৯২ লাখ ৪২ হাজার ৭৬৩ টাকার আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছিল। দুদকের উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক মামলার বাদী ছিলেন। মামলার পরপরই আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। মামলায় ১৭ জন চিকিৎসক এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দফতরের আট জনকে আসামি করা হয়েছিল। আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ইসরাত জাহানকে চারটি মামলাতেই আসামি করা হয়। দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা তৎসহ দুদক আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

আরএম/জেডএস