সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল করার দাবিতে রাজধানীর চাঁনখারপুল মোড় অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে বন্ধ হয়ে গেছে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে যানবাহন ওঠা-নামার সুযোগ। এর ফলে ঢাকায় প্রবেশ করতে পারছে না কোনো গাড়ি। ফ্লাইওভারের ওপরে-নিচে তৈরি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের।

রোববার (৭ জুলাই) বিকেল তিনটা থেকে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকায় প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে তৈরি হয়েছে ব্যাপক যানজট। মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার হয়ে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, কমলাপুর, রামপুরা, হাতিরঝিল, নারায়ণগঞ্জ, পোস্তগোলা, পাগলা, ডেমরা স্টাফ-কোয়ার্টার, সিলেট, চিটাগাং রোড, শনির আখড়া, সাইনবোর্ডে যাওয়ার এবং আসার সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ফ্লাইওভারের ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে শত শত যানবাহনকে। বিক্ষুব্ধ এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিবহনের গাড়িও গন্তব্যে যেতে পারেনি।

শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি চলবে। সারা দেশের ছাত্রসমাজ এই ইস্যুতে একত্রিত হয়েছে। কোটার নামে বৈষম্য চলতে দেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোটা প্রথার বিলুপ্তি ঘোষণা করতে হবে।

আবির হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবে না। কোটার নামে মুক্তিযুদ্ধকে অপমানিত করা হচ্ছে। যেখানে বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সেখানে নতুন করে কোটার মাধ্যমে সেই মুক্তিযুদ্ধকে নিচে নামানো হচ্ছে। বীর মুক্তিযুদ্ধাদের নাতি-পুতিরা কেন এমন সুবিধা পাবে। এটি যদি বংশ পরম্পরায় চলতেই থাকে তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

হাবিবুর রহমান নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, কোটা এখন শিক্ষার্থীদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। যারা মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেতে ভয় পায় তারাই কোটার পক্ষে সাফাই গাইছে। আমরা চাই অবিলম্বে কোটাপ্রথা বাতিল করা হোক। সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিকের সমান অধিকার। এর মধ্যে কেউ আবার কোটা দেখিয়ে বেশি সুবিধা গ্রহণ করবে তা হতে দেওয়া হবে না।

অপরদিকে শিক্ষার্থীদের অবরোধকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পর্যাপ্ত উপস্থিতি দেখা গেছে। চাঁনখারপুল মোড়েই প্রায় অর্ধশতাধিক পুলিশ সদস্যদের অবস্থান করছেন। যদিও বিষয়টি নিয়ে উপস্থিত কোনো পুলিশ কর্মকর্তাই কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আরএইচটি/জেডএস