নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় এক নারী সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।

রোববার (৩০ জুন) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কক্সবাজার সদর থানাধীন খুরুশকুল ইউপির ইসলামাবাদ পূর্ব হামজার ডেল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গির নাম পারভীন আক্তার (২৪)।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) এটিইউর পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস) মাহফুজুল আলম রাসেল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গত ৯ জুন নেত্রকোণা মডেল থানাধীন ৭ নং কাইলাটি ইউনিয়নের বাসাপাড়া গ্রামের স্থানীয় একটি খামারবাড়ি ভাড়া নিয়ে মৎস্য খামার পরিচালনার অন্তরালে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর একটি বড় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের খোঁজ পায় পুলিশ। একই দিনে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের বোম্ব ডিসপোজাল টিম ও সোয়াট টিমসহ নেত্রকোণা জেলা পুলিশ যৌথভাবে ওই স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগজিন ও তাজা গুলি, দূরবীন, কম্পাস, ওয়াকিটকি সেট, হাতকড়া, ল্যাপটপ, এসএসডি, মোবাইল ফোন, পিকআপ গাড়িসহ মোট ৮৬ ধরনের উগ্রবাদী প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপাদান ও সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে।  এ সংক্রান্তে নেত্রকোণা মডেল থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।

প্রায় ৩ বছর আগে মামলার এজাহারনামীয় ১ নং আসামি মো হামিম হোসেন ওরফে ফাহিম ২.৫ একর জায়গায় অবস্থিত একটি খামার বাড়ি ৫ বছরের জন্য ভাড়া নেন। মো.হামিম হোসেন এবং তার স্ত্রী এজাহারনামীয় ৪ নং আসামি উম্মে হাফসা (২৫), গ্রেপ্তার পারভীন আক্তার ও তার স্বামী রশিদ আহম্মদ (সাংগঠনিক নাম তানভীর) মৎস্য খামারের দোতলা পাকা বাড়ির বিভিন্ন কক্ষে বসবাস করতেন। গ্রেপ্তার পারভীন আক্তারসহ তার অন্যান্য সহযোগীরা মৎস্য চাষের আড়ালে বাড়িটিকে ‘আনসার আল ইসলামের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। তারা নিজস্ব যানবাহন ব্যবহার করে সর্বোচ্চ গোপনীয়তার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগঠনের জন্য সদস্য সংগ্রহ করে প্রশিক্ষণ প্রদানের কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।

তিনি আরও জানান,  এ লক্ষ্যে তার খামার বাড়িটিতে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ সরঞ্জাম স্থাপন করেন এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গুলি, বিস্ফোরক দ্রব্য, দাহ্য পদার্থ ইত্যাদি অবৈধভাবে সংগ্রহ করে জমা রাখেন। পারভীন আক্তার তার অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে পরস্পর যোগসাজশে ‘আনসার আল ইসলাম’ এর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগৃহীত সমর্থকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছাড়াও ওই কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে আসা সদস্যদের বসবাসের সুযোগ তৈরি করা, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় রান্নাবান্না করাসহ প্রশিক্ষণের জন্য আসা নারী প্রশিক্ষণার্থীদের সার্বিক বিষয় সমন্বয় করতেন। গত ৫ জুন হামিম হোসেন গ্রেপ্তার হওয়ার পর পারভীন আক্তার আত্মগোপনে চলে যান।

এমএসি/এসকেডি