রাজধানীতে ঝরছে আষাঢ়ের বৃষ্টি। কালো মেঘে ঢাকা পড়েছে গোটা ঢাকা শহর। দিনেই যেন নেমে এসেছে সন্ধ্যা। সেই সকাল থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি, থামার কোনো নাম নেই। যদিও আজ দিনভর বৃষ্টি নামবে বলে আগেই জানিয়ে রেখেছিল আবহাওয়া অফিস।

টানা বৃষ্টির কারণে রাজধানীর কোথাও যানবাহনের সংখ্যা কম আবার কোথাও লেগেছে যানজট। কোথাও কোথাও সৃষ্টি হয়েছে জলজটের। সব মিলিয়ে আষাঢ়ের এই বৃষ্টি উপভোগ্য হলেও বেশ বিড়ম্বনায়ও পড়েছেন রাজধানীবাসী।

সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সর্বত্রই বৃষ্টি পড়ছে এবং এর ফলে পানি জমে থাকা, সিএনজিসহ গণপরিবহনের ঘাটতি এবং যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথে বের হওয়া মানুষদের। অনেকে ছাতা মাথায় চলাচল করছেন। রিকশা ও সিএনজি চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন। বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়াতেই যাতায়াত করছেন সবাই। অনেক সড়ক ও অলি গলিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সেসব সড়কে পায়ে হেঁটে কেউ চলাচল করতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে রিকশা বা সিএনজি নিতে হচ্ছে।

রাজধানীর মালিবাগ মোড়ে বৃষ্টি ভেজা দুপুরে কথা হয় পথচারী আজিজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছি, আবার হাঁটতে হাঁটতে শরীর শুকাচ্ছে। মার্কেটিংয়ে কাজ করি বলে বৃষ্টির দিনেও মার্কেটে মার্কেটে ঘোরাঘুরি করতে হচ্ছে। পর্যাপ্ত গণপরিবহন নেই রাস্তায়। তাই হেঁটেই এদিক-সেদিক যাচ্ছি।

মোহাম্মদপুরের দিক থেকে আসা সিএনজি চালক রহিদুল ইসলাম বলেন, বনানী, মহাখালী, বিজয় সরণি, ফার্মগেট‌ এলাকায় সকাল থেকে যানজট দেখেছি। এখন আবার মোহাম্মদপুরের দিক থেকে আসলাম, রাস্তায় দেখেছি গণপরিবহন তুলনামূলক কম। কয়েক জায়গায় যানজট আছে। হাতিরঝিলের বিভিন্ন অংশে এখনো পানি জমে থাকতে দেখেছি। মানুষ রাস্তায় আছে, তবে যাত্রী তুলনামূলক কম। তাই যখন পাচ্ছি যাত্রীদের কাছ থেকে কিছু টাকা বেশি চেয়ে নিচ্ছি।

গাবতলীর দিক থেকে আসা বৈশাখী বাসের হেলপার রাজিব আহমেদ বলেন, রাস্তায় যাত্রীর সংখ্যা কম। অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গাবতলীর দিক থেকে আসলাম। বিজয় সরণির দিকের রাস্তায় কিছুটা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে যানবাহনগুলো ধীরগতিতে যাচ্ছে, ফলে পেছনের দিকে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

হাতিরঝিল ফুটপাতের অস্থায়ী খাবারের দোকানি আলতাফ হোসেন সড়কে দাঁড়িয়ে আছেন ছাতা মাথায়। তিনি বলেন, সকাল থেকে ঠিকমতো দোকানই খুলতে পারিনি, কাস্টমার একেবারেই নেই। ব্যবসার অবস্থা খারাপ। খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ আজ বাইরে বের হয়নি।

উল্লেখ্য, আবহাওয়া অধিদপ্তর আগেই জানিয়েছিল আগামী ৪৮ ঘণ্টা টানা বৃষ্টি হতে পারে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় আছে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। ফলে সারা দেশে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। যা আগামী পাঁচ দিন অব্যাহত থাকতে পারে।

এএসএস/এমএ