পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, উন্নয়নমূলক বাজেটে বিদেশ নির্ভরতা অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে। দেশ ও বৈশ্বিক অর্থনীতির নানা দিক বিবেচনায় কিছু বৈদেশিক ঋণ নিতে হয়। এখন আমাদের দেশের উপযোগী বা পছন্দ মতো না হলে অনেক বিদেশি ঋণ প্রস্তাব আমরা ফিরিয়ে দেই। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃ‌ত্বে সেই সক্ষমতা অর্জিত হ‌য়ে‌ছে।

রোববার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট সর্বসম্মতিক্রমে পাস হওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হ‌য়ে এ কথা ব‌লেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব‌লেন, এক সময় বিএনপির আমলে বাজেটের আগে অর্থমন্ত্রীকে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে প্যারিস কনসোর্টিয়ামে যেতে হতো। তাদের সময় বিশেষ করে উন্নয়ন বাজেটে বিদেশ নির্ভরতা ছিল ৫০ শতাংশের বেশি। আজকে এটি ১৫-২০ শতাংশে নেমে এসেছে। এবং আমরা বিশ্বব্যাংক থেকে শুরু করে অনেকের ঋণ প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছি... ফিরিয়ে দেই।

তি‌নি বলেন, সামগ্রিক ও বৈশ্বিক অর্থনীতির স্বার্থে কিছু বৈদেশিক ঋণ নিতে হয়। যেমন আমরা বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের পার্টনার। সেখানে আমাদের জন্য বরাদ্দ থাকে। সেটি না নিলে ল্যাপস হয়ে যায়, এজন্য ক্ষেত্রবিশেষে নিতেও হয়। 

বাজেটের সমালোচনাকে গতানুগতিক আখ্যা দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রতিবারই বাজেট প্রস্তাব ও পাসের পর একটি মহল বলে বাজেট উচ্চাভিলাষী, বাস্তবায়নযোগ্য নয়। অথচ গত ১৫ বছরে আমাদের প্রণীত বাজেট বাস্তবায়নের হার ৯২ থেকে ৯৬ শতাংশ। দেশ এগিয়ে গেছে, মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, দারিদ্র্য ৪১ থেকে ১৮.৫ শতাংশে এবং অতি দারিদ্র্য ২৫.৫ থেকে মাত্র ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। গড় জিডিপি ভারতকে ছাড়িয়েছে এবং অনেক আগেই পাকিস্তানকে ছাড়িয়েছে। 

সৌদি আরবের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ‘পলিটিক্যাল কনসালটেশন’-এ যোগ দিতে সোমবার (১ জুলাই) ভোরে রিয়াদের উদ্দেশে যাত্রা করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। 

এ বিষয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, সৌদি আরব আমাদের বড় উন্নয়ন সহযোগী। সেখানে প্রায় ৩০ লাখ বাংলাদেশি বসবাস করে এবং দেশে রেমিট্যান্স পাঠায়। গ্রিন এনার্জি, সৌরশক্তি ও বন্দর ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের সাথে সৌদি সহযোগিতা রয়েছে। শিল্প ক্ষেত্রে বিনিয়োগের জন্য আমরা তাদের বলব। 

মন্ত্রী ব‌লেন, পাশাপাশি সৌদিরা যেহেতু বিভিন্ন দেশের ব্যাংকে অর্থ রাখে, আমাদের দেশের ব্যাংকগুলোর অফশোর অ্যাকাউন্টে অর্থ রাখার প্রস্তাব তাদেরকে দিতে পারি। তারা নিয়মানুযায়ী লাভ পাবে এবং সেই অ্যাকাউন্ট থেকে তারা তাদের মুদ্রায় লেনদেন করতে পারবে। বিদেশি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য অফশোর অ্যাকাউন্ট সুবিধার জানালা আমরা উন্মুক্ত করেছি, এটি আমরা তুলে ধরতে চাই। 

এনআই/কেএ