সদ্য শেষ হওয়া কোরবানির ঈদে আলোচনার তুঙ্গে ছিল সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মের ১৫ লাখ টাকার এক ‘উচ্চবংশীয়’ ছাগল। এনবিআরের সদ্য সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ওরফে ইফাতের ছাগলটি কেনার খবর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও শেষ পর্যন্ত অ্যাগ্রোর মালিক ইমরান আহমেদ ছাগলটি বিক্রি করতে পারেননি।

ইতোমধ্যে মোহাম্মদপুর এলাকায় অবস্থিত সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ফার্মের একাংশ। ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ বলছে, সাদিক অ্যাগ্রো লিমিটেড অবৈধভাবে খাল ও সড়কের জায়গা দখল করেছে। এ ছাড়া, ওই অংশে রিকশার গ্যারেজ ও বস্তিঘরের মতো বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। সেগুলোও উচ্ছেদ করা হচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। সামাজিক মাধ্যমে আলোচিত এই অ্যাগ্রোটিতে অভিযানের দিকে নজর ছিল সবার। একই সঙ্গে ১৫ লাখ টাকার ভাইরাল সেই ছাগলকে ঘিরে ছিল কৌতূহল। অভিযানের সময় উপস্থিত অনেককেই ১৫ লাখ টাকার সেই ছাগলটিকে খুঁজতে দেখা যায়।

সূত্রে জানা গেছে, অভিযান শুরুর আগে সাদিক অ্যাগ্রোর লোকজন সেই ছাগলটিসহ ফার্মের অন্যান্য পশু অন্যত্র সরিয়ে নেন।

এদিকে উচ্ছেদ অভিযানের খবর পেয়ে খাল ভরাট করে বসানো বস্তিঘরের বাসিন্দারা ছাউনির টিন ও বাঁশ-কাঠ খুলে ফেলতে শুরু করেন। বেলা সাড়ে ১১টার পর ওই স্থানে সিটি করপোরেশনের ভারি যন্ত্র আনা হয়। কিছুক্ষণ পর আসেন সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহে আলম, ঢাকা উত্তর সিটির অঞ্চল-৫ এর নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বির আহমেদসহ অন্যরা। পরে অবৈধ স্থাপনা ভাঙার কাজ শুরু হয়।

শুরুতে খামারের পশ্চিম অংশ ভাঙা হয়। এর নিচে সাদিক অ্যাগ্রোর কার্যালয় ছিল। আর ওপরে টিনের ছাউনির একটি কক্ষে খামারের কর্মচারীদের থাকার কক্ষ ছিল। স্থাপনাটি ভাঙার কাজ চলাকালে দোতলার কক্ষে দুজন অবস্থান নিয়ে উচ্ছেদে বাধা দেন। পরে পুলিশ সদস্যদের সাহায্যে তাদের সেখান থেকে সরানো হয়। পরে ওই অংশ ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়।

এ সময় একই সঙ্গে পেছনের দিকে থাকা অবৈধ স্থাপনাগুলোও ভাঙার কাজ শুরু করেন সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। বস্তিঘর ও রিকশার গ্যারেজের টিনগুলো আগেই সরিয়ে নেওয়ার কারণে শুধু বাঁশের কাঠামোগুলো ছিল। সেগুলো ভেঙে ফেলা হয়।

উচ্ছেদ অভিযান চালানো ঢাকা উত্তর সিটির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বির আহমেদ বলেন, কোনো ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এই অভিযান চালানো হচ্ছে না। খালের জায়গা যে বা যারা দখল করে রেখেছে, তাদের উচ্ছেদে এ অভিযান চালানো হচ্ছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ওএফএ/এমজে