বিদেশ থেকে বিভিন্ন বেতার যন্ত্রপাতি আমদানি, ব্যবহার এবং বাজারজাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নির্দেশিকা তৈরি করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) খসড়া প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন করেছে। এ খসড়া নির্দেশিকার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বেতার যন্ত্রপাতি আমদানি, ব্যবহার, বাজারজাতকরণ এবং তালিকাভুক্তি সনদ গ্রহণের নির্দেশিকা-২০২৪’। একইসঙ্গে এ খসড়া নির্দেশিকার ব্যাপারে ভোক্তাদের আগামী ৩০ জুনের মধ্যে মতামত জানানোর আহ্বানও জানিয়েছে বিটিআরসি।

সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১ (সংশোধিত আইন ২০১০) ও আমদানি নীতি আদেশ অনুযায়ী যেকোনো প্রকার বেতার যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে আবশ্যিকভাবে কমিশনের পূর্বানুমতি নিতে হয়। বেতার যন্ত্রপাতির ধরন অনুযায়ী কমিশনের নির্দেশিকা (বাংলাদেশে ডিভাইস আমদানির নির্দেশিকা) অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার সনদ ইস্যু করা হয়। তবে এবার এসব ক্ষেত্রে সেবা সহজিকরণ করতে কমিশনের সব নির্দেশিকা একত্রিত করে ‘বেতার যন্ত্রপাতি আমদানি, ব্যবহার, বাজারজাতকরণ এবং তালিকাভুক্তি সনদ গ্রহণের নির্দেশিকা-২০২৪’ শিরোনাম আকারে খসড়া নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।

বিটিআরসির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, এই নির্দেশিকার বিষয়ে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় মতামত জানাতে পারবে। এক্ষেত্রে didarul@btrc.gov.bd ই-মেইলের ঠিকানায় আগামী ৩০ জুন বিকেল ৪টা পর্যন্ত মতামত পাঠানো যাবে।

যে কারণে প্রণয়ন করা হচ্ছে এই নির্দেশিকা

নতুন করে আমদানি করা বেতারযন্ত্রের ব্যাপারে নির্দেশিকা প্রণয়নের ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে দৈনন্দিন জীবনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রযুক্তির কল্যাণে ব্যাপক রূপান্তর সাধিত হয়েছে। প্রযুক্তির এই ক্রমবর্ধমান উৎকর্ষের ক্ষেত্রে নানা ধরনের বেতার যন্ত্রপাতির ব্যবহার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ওয়াকিটকি, মোবাইল হ্যান্ডসেট, আইওটি ডিভাইস, রাউটার প্রভৃতির ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই এসব বেতার যন্ত্রপাতি আমদানি করা হতে শুরু করে গ্রাহক পর্যায়ে ব্যবহার পর্যন্ত সর্বত্র মনিটরিং বা নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজনীয়তাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার বর্তমানে মোবাইল হ্যান্ডসেট স্থানীয়ভাবে উৎপাদন সংযোজন হওয়ায় আমদানি নির্ভরতা অনেকাংশে কমে গেছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে মোবাইল হ্যান্ডসেটসহ অন্যান্য বেতার যন্ত্রপাতি বৈধপথে আমদানি না হওয়ায় সরকার এ খাত থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। আর এ নির্দেশিকা প্রণয়নের ফলে বৈধপথে বেতার যন্ত্রপাতি আমদানি, ব্যবহার, বিক্রয় ও বাজারজাতকরণের পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছে বিটিআরসি।

সেবা সহজ হবে, কমবে অবৈধ যন্ত্রের ব্যবহার

এর আগে কমিশন থেকে বিভিন্ন প্রকার বেতার যন্ত্রপাতি যেমন– ট্রান্সিভার, ওয়াকিটকি, রাউটার, আইওটি ডিভাইস, মোবাইল হ্যান্ডসেট, ব্রডকাস্টিং যন্ত্রপাতি আমদানি, ব্যবহার ও বাজারজাতকরণের জন্য আলাদা আলাদা নির্দেশিকা ছিল। ফলে বেতার যন্ত্রের ধরন অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন নির্দেশিকা থাকায় নানাবিধ জটিলতার সম্মুখীন হতে হতো। বেতার যন্ত্রপাতি ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে বেতার যন্ত্রপাতি ব্যবহারের বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা না থাকায় অবৈধভাবে বেতার যন্ত্রের ব্যবহার বেড়ে যায়।

বিটিআরসি বলছে, এসব জটিলতা নিরসন করতেই কমিশন থেকে এই নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে। একইসঙ্গে এই নির্দেশিকা জারি হলে পূর্ববর্তী অন্যান্য নির্দেশিকাগুলো অকার্যকর হয়ে যাবে বলেও জানানো হয়েছে।

আরএইচটি/এসএসএইচ