ভারত-চীন-রাশিয়া থেকে সমরাস্ত্র কেনা হচ্ছে : সংসদে প্রধানমন্ত্রী
সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আলোকে সমরাস্ত্র ক্রয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যা ভবিষ্যতে সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। রাশিয়া, চীন, তুরস্ক, ভারতসহ সমরাস্ত্র শিল্পে উন্নত বিভিন্ন দেশ থেকে সমরাস্ত্র ক্রয় করা হচ্ছে বলে জানান সরকার প্রধান।
বুধবার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সব কথা জানান। এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
বিজ্ঞাপন
শেখ হাসিনা বলেন, বাহিনীগুলোর গঠন ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ। সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নের জন্য যথাসম্ভব সব বাস্তবমুখী কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনীর জন্য ক্রয় করা বিভিন্ন উন্নত সরঞ্জামাদির মধ্যে কাসা ইউটিলিটি বিমান, ডলফিন ইউরোকপ্টার, ডায়মন্ড প্রশিক্ষণ বিমান, এমবিটি-২০০০ ট্যাংক, ভিটি-ফাইভ লাইট ট্যাংক, আর্মার্ড রিকোভারি ভেহিক্যাল, সেলফ প্রপেল্ড (এসপি) কামান, এন্টি ট্যাংক গাইডেড উইপন, শর্ট রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, মাইন রেজিস্ট্যান্ট অ্যাম্বুশ প্রটেক্টেড ভেহিক্যাল (এমআরএপি), আনম্যানড এরিয়াল ভেহিক্যাল, সার্ফেস টু এয়ার মিসাইল সিস্টেম, আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার, র্যাডার কন্ট্রোল এয়ার ডিফেন্স গান সিস্টেম, নাইট ভিশন মনোকুলার, অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র, আধুনিক যোগাযোগ সরঞ্জামাদি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
আরও পড়ুন
প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশের সমুদ্র নিরাপত্তা এবং সম্পদ রক্ষার বিষয়ে সরকারের প্রথম মেয়াদ থেকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের সমুদ্র এলাকায় বহিঃশত্রুর মোকাবিলা ছাড়াও জলদস্যুতা, মাদক/অস্ত্র/মানব চোরাচালান প্রতিরোধ, সামুদ্রিক দূষণরোধ এবং মৎস্য ও খনিজ সম্পদের সুরক্ষা ও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে একটি শক্তিশালী নৌ-শক্তি গড়ে তোলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এই লক্ষ্যে ইতোমধ্যে অত্যাধুনিক সাবমেরিন, ক্যাসল ক্লাস জাহাজ, ফ্রিগেড, করভেট, সমুদ্র জরিপ জাহাজ, লার্জ পেট্রোল ক্রাফট, মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট এবং মেরিটাইম হেলিকপ্টারসহ অত্যাধুনিক নৌযুদ্ধ সরঞ্জাম বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে।
একইসঙ্গে নৌবাহিনীর আধুনিকায়নের জন্য ডাইভিং বোট, ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি, রিমোট কন্ট্রোল গান, আনম্যানড এয়ারক্রাফট সিস্টেম ইত্যাদিসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি, নেটওয়ার্ক হাব স্টেশন, টেকটিক্যাল ফায়ারিং রেঞ্জ, লং রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স ও সার্ভিলেন্স র্যাডার, বিভিন্ন সরঞ্জাম ও অস্ত্র ক্রয় করা হয়েছে। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনীর জন্য আইএফএফ সেন্টার গঠনের প্রক্রিয়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।
সরকার প্রধান জানান, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে আধুনিকায়ন করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন যুগোপযোগী কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ যাবৎকালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জন্য মিগ-২৯, ইয়াক-১৩০ এবং এফ-৭ ইএ-১ যুদ্ধ বিমান, সি-১৩০ জে এবং কে-৮ বিমান, মি-১৭১ হেলিকপ্টারসহ অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয় করা হয়েছে। এ সব আধুনিকায়নের ফলে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী আজ একটি আধুনিক ও চৌকস বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর উন্নয়নে র্যাডার, আনম্যানড এরিয়াল ভেহিক্যাল, ট্রান্সপোর্ট ট্রেইনার এয়ারক্রাফট এবং সিমুলেটর, লং ও শর্ট রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স ও সার্ভিলেন্স র্যাডার, হেলিকপ্টারে নাইট ভিশন সিস্টেম স্থাপন, মেরিটাইম সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ হেলিকপ্টার ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য সরঞ্জাম ক্রয় করা হয়েছে। যা সার্বিকভাবে বাহিনীর মান উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে সরাসরি ভূমিকা রেখেছে বলে প্রতীয়মান।
এসআর/এসএম