পরিচয় গোপন করে আবারও বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পাসপোর্ট সেবা দিতে গ্রাহক হয়রানি ও ঘুষ দাবির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনিয়মের প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। এরইমধ্যে এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। 

দুদকের বরিশাল কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মিরাজ হোসেন।

বুধবার (২৬ জুন) এ বিষয়ে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট সেবা প্রদানে গ্রাহক হয়রানি ও ঘুষ দাবির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ছদ্মবেশে পাসপোর্ট অফিসে আসা সেবাগ্রহীতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তথ্য পাওয়া যায়, অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন করার জন্য বিভিন্ন ফটোকপির দোকান/ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গেলে পাসপোর্টের আবেদনের জন্য ব্যবসায়ী/দোকানিরা প্রতি আবেদনে ২০০ টাকা বা তার বেশি নেয়। এছাড়াও ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করার অভিযোগও পাওয়া যায়। 

তিনি বলেন, অভিযানে বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস বরিশালের উচ্চমান সহকারী মোশাররফের বিরুদ্ধে সেবাগ্রহীতাদের বিভিন্নভাবে হয়রানির বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়, যা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালককে অবগত করা হয়। তিনি অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ সেবা প্রদান হয়রানিমুক্ত ও ত্বরান্বিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন মর্মে দুদক টিমকে আশ্বস্ত করেন। অভিযানে সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনা করে টিম কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।

অন্যদিকে পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক জাকির হোসেনের এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুদকের নির্দেশনা অনুসরণ করে ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হচ্ছে। এরইমধ্যে তাকে ডেস্ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

এর আগে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালায় দুদক। দুদকের বরিশাল জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক এইচএম আক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই অভিযানেও অনিয়মের প্রমাণ মিলেছিল।

ওই সময় আক্তারুজ্জামান জানান, একজন সেবাগ্রহীতা বরিশাল পাসপোর্ট অফিসের বিরুদ্ধে এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দালালদের দৌরাত্ম্যে হয়রানি, পাসপোর্ট পেতে ভোগান্তি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ দিলে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। আমরা অনিয়মের চিত্র দেখতে পেয়েছি। এখানে মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অনিয়ম রোধে সেবাপ্রত্যাশীদের সচেতন করেছি, পাসপোর্ট অফিসের দায়িত্বরত যুগ্ম-পরিচালককে পরামর্শ দিয়েছি অনিয়ম বন্ধে তিনি যেন কার্যকর ভূমিকা রাখেন। যুগ্ম পরিচালক আমাকে আশ্বস্ত করেছেন তিনি অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে আরও কঠোর হবেন। 

আরএম/জেডএস