সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার জাতীয় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দুর্নীতি নিরসনে সবচেয়ে বড় বাধা। কুমিল্লায় একটি প্রকল্প নিয়ে চেষ্টা করেও দুইজন মন্ত্রী পারেননি। আমরা ডিপিপি দেওয়ার পর কোথায় যেন আটকে যায়। গত সাত বছর ধরে চেষ্টা করেও ডিপিপি পার করতে পারিনি।

গতকাল (মঙ্গলবার) জাতীয় সংসদে কুমিল্লা-৬ আসনের এ সংসদ সদস্য এসব কথা বলেন। 

বাহার বলেন, দেশের ১৬ কোটি নাগরিকের মধ্যে এক কোটি নাগরিক সকল ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে চলে এসেছে। কিন্তু ট্যাক্স দেয় মাত্র ৩৭ লাখ মানুষ। ট্যাক্সের আওতা বাড়ানো দরকার। ট্যাক্সের আওতা বাড়াতে পারলেই এই বাজেটে আমরা সফল হতে পারবো। আমাদের যারা ট্যাক্স অফিসাররা কাজ করে, তারা সততা এবং নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করলে এবং আমরা যদি ট্যাক্সের আওতা বাড়াতে পারি, তাহলে অনেক ট্যাক্স পাবো ও বাজেট বাস্তবায়ন সফল হবে। বাজেট বাস্তবায়ন সফল হলেই আমরা ২০৪১ সালে সুন্দর বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাবো।

তিনি আরও বলেন, কুমিল্লাতে আমাদের শত বছর পুরোনো একটি টাউন হল আছে। এই টাউন হলে নগর মিলনায়তন পাঠাগার নির্মাণ করতে আমাদের দুইজন মন্ত্রী চেষ্টা করেও পারেনি। একটা ডিপিপি তৈরি করলাম কিন্তু কোথায় যেন জটিলভাবে আটকে যায়। এজন্য বলি আমরা যদি আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসন না করতে পারি, তাহলে বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ করে আমরা ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো না। আপনার মাধ্যমে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, কুমিল্লার টাউন হলের দীর্ঘ ঐতিহ্য আছে। এখানে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এখানে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, বক্তব্য দিয়েছেন মাওলানা ভাসানী এবং এখানে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছেন আমাদের প্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। এই টাউন হলের একটি ডিপিপি নিয়ে আমি ৭ বছর ধরে চেষ্টা করেছি কিন্তু আমি কাজটা করতে পারিনি। 

তিনি বলেন, গত দশ বছর যাবত রেমিটেন্সে আমরা কুমিল্লাবাসী এক নম্বরে। গত পাঁচবছর যাবত আমরা অনেক বেশি খাবার উৎপাদন করি। প্রত্যেক বছর আমাদের চাহিদা ১০ লক্ষ ৮১ হাজার মেট্রিক টন চাল কিন্তু আমরা ১৪ লাখ ৪২ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদন করেছি। আমরা কুমিল্লা থেকে ৩ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য জাতিকে উপহার দিতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের মাছ দরকার ১ লক্ষ ৫৪ হাজার টন কিন্তু আমরা ৩ লক্ষ ১২ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন করে জাতিকে উপহার দিয়েছি। .

গত পাঁচ বছর যাবত সকল সূচকে কুমিল্লা জেলা এক নম্বরে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, মাননীয় স্পিকার আমাদের কুমিল্লার নামে কুমিল্লা বিভাগের নাম উত্থাপন করেছিলাম নেত্রীর কাছে। আমাদের কুমিল্লা প্রবাসীরা বিভিন্ন অ্যাম্বাসির মাধ্যমে দরখাস্ত দিয়েছে কুমিল্লা নামে কুমিল্লা বিভাগের জন্য। আমাদের কুমিল্লার সকল মুক্তিযোদ্ধারা নেত্রীর কাছে আবেদন করেছে।  আমাদের ১০ হাজার শিক্ষক কুমিল্লা নামে বিভাগ করতে আবেদন জানিয়েছে। আমাদের এই আবেদনগুলো যেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে উত্থাপন করা হয়, সে বিষয়ে আমি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমি আবারও কুমিল্লা নামে কুমিল্লা বিভাগ করতে দাবি জানাচ্ছি। 

এসআর/এনএফ