বেশি বেতনে চাকরির প্রলোভনে ফেলে অসচ্ছল কিশোরীদের ভারতে পাচার করছিল একটি চক্র। চক্রটির মূল টার্গেট ছিল গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজ করা কিশোরীরা। অভিনব কৌশলে চক্রের কেউ কেউ কিশোরীদের একত্রিত করত; কেউ নিজে ভারতে উচ্চ বেতনে চাকরি করছে, তিন মাসেই হয়েছে তার ভাগ্যের পরিবর্তন— এসব বলে ফাঁদে ফেলত কিশোরীদের। এই চক্রের এক সদস্য পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর জানা গেছে এসব তথ্য।

রোববার (২৩ জুন) রাতে মো. তারেক (৩৪) নামে চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে নগরীর চন্দ্রনগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের জালিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকাতে তারেক ও তার ডিজে দল বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাচ-গান করত। সেখান থেকেই পরিচয় হয় মানবপাচার চক্রের সঙ্গে। তারেক দীর্ঘদিন ধরে উঠতি বয়সের কিশোরীদের সড়ক পথে যশোর নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে অবৈধভাবে ভারতে পাচার করছিল।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার তারেক জানায়, অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে নিয়ে কিশোরীদের পাচারে সংঘবদ্ধ চক্রের ভারতীয় সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করত তার স্ত্রী। আর তার স্ত্রীর বান্ধবী চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরির আড়ালে সেখানে কর্মরত মেয়েদের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করত। পরে তাদের অধিক বেতনে ভারতের পার্লারে চাকরি দেওয়ার নামে কৌশলে তারেক ও তার স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। পরে তারাসহ অন্য আসামিদের পরস্পর যোগসাজশে যশোরের অজ্ঞাতনামা সীমান্ত ব্যবহার করে অবৈধ পথে ভারতে নিয়ে যায়। সেখানে ভয়-ভীতি ও মারধর করে যৌন-শোষণের কাজে লিপ্ত করা হয়।

বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্জয় কুমার সিনহা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওই চক্রের মাধ্যমে পাচার হওয়া এক কিশোরী কৌশলে ভারত থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে। বাংলাদেশে এসে ওই কিশোরী তার ও তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া সবকিছু বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশকে অবহিত করে। এরপর থেকে চক্রের খোঁজে নেমে পড়ে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ। অবশেষে রোববার এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ব্যাপারে বায়েজিদ বোস্তামী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটক যুবককে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের খোঁজে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।

আরএমএন/এসএসএইচ