চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেললাইন তৈরি হওয়ার পর ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত দুটি ট্রেন চালু হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত কোনো ট্রেন চালু করা হয়নি। তাই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে স্থায়ী ট্রেন চালুর দাবি উঠেছে।

সোমবার (২৪ জুন) দুপুরে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম শাখা।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের প্রেসিডেন্ট জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা প্রেসিডেন্ট আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি চৌধুরী কে এন এম রিয়াদ, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু হানিফ নোমান প্রমুখ।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত ও পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সঙ্গে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রামের যোগাযোগ সহজতর ও আরামদায়ক করতে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঈদের সময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালু করে। যাত্রীদের চাহিদা ও রেলটি বেশ লাভজনক হওয়ার কারণে কর্তৃপক্ষ ট্রেনটির চলাচলের মেয়াদ বাড়ায়। কিন্তু দেশের জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে ও রেলের লাভজনক একটি রুটকে কেন বিশেষ বিশেষ সময় বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করতে হবে? দেশের অর্থনৈতিক প্রাণশক্তি, অর্থনৈতিক হাব, শিল্প ও বন্দরনগরীর সঙ্গে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের কেন স্থায়ী ট্রেন সার্ভিস হবে না? তাই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ঈদ স্পেশাল ট্রেনকে বাদ দিয়ে স্থায়ী ট্রেন চালুর দাবি জানানো হচ্ছে।

ঢাকা থেকে সমগ্র জেলার যাত্রীরা কক্সবাজার যাওয়ার জন্য রেল কর্তৃপক্ষ পৃথক ট্রেন চালু করলেও চট্টগ্রামের যাত্রীদের স্বার্থ উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম থেকে খুবই নগণ্য সংখ্যক যাত্রী নেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া ঈদ উপলক্ষ্যে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন চালু করা হলেও তা সাময়িক। যা এ অঞ্চলের সাধারণ জনগণের সঙ্গে তামাসার সামিল। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে যদি আন্তঃনগর ট্রেন কক্সবাজার স্পেশাল ও পর্যটন এক্সপ্রেস চলাচল করতে পারে, সেক্ষেত্রে এই রুটে পৃথক ট্রেন চালুতে বাঁধা কোথায়? 

ক্যাব জানায়, বর্তমান সরকার প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেলপথ সম্প্রসারণ করেছে। গত বছরের ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মিত ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেললাইনের উদ্বোধন করেন। ওই বছরের ১ ডিসেম্বর একটি এবং চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি থেকে আরেকটিসহ ঢাকা থেকে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন চালু করেন। এই দুটি ট্রেনে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে যাতায়াতের জন্য মাত্র ১১৫টি করে আসন বরাদ্দ রাখা হয়েছে। 

ঢাকা থেকে দুটি রেল চলাচল করলেও এই অঞ্চলের লোকজন রেলে যাতায়াতের সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার রেলপথে দুটি আন্তঃনগর ট্রেনে চট্টগ্রামের যাত্রীদের মাত্র একটি এসি ও একটি নন এসি দুটি কোচ বরাদ্দ রাখা হলেও যাত্রীদের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি পূরণ হচ্ছে না। যা চট্টগ্রামবাসীর অধিকারকে পুরোপুরি অবজ্ঞার সামিল। তাই ঈদ উপলক্ষে চালু হওয়া চট্টগ্রাম-কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেনটি এই রুটে স্থায়ী ট্রেনে পরিণত করা হলে এ অঞ্চলের যাত্রীদের প্রতি সুবিচার করা হবে।

বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, তুলনামূলকভাবে ট্রেনে ভ্রমণ সুবিধা হওয়ায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ ট্রেনে যাতায়াতে আগ্রহী। ঈদ স্পেশাল ট্রেনকে স্থায়ীভাবে চালু করতে কালক্ষেপণ করলে চট্টগ্রামের সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

/এমএইচএন/এমএসএ