দেশজুড়ে তীব্র দাবদাহের কারণে বিদ্যুৎ ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রামাঞ্চলে কিছু কিছু এলাকায় চাহিদার তুলনায় প্রাপ্তি কম হওয়ায় সীমিত আকারে লোডশেডিং হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। এসময় সংসদে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার শিরীন শারমিন।

নসরুল হামিদ বলেন, চাহিদার তুলনায় প্রাপ্তি কম হলে সাধারণত লোডশেডিং হয়। দেশজুড়ে তীব্র দাবদাহের কারণে বিদ্যুৎ ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রামাঞ্চলে কিছু কিছু এলাকায় চাহিদার তুলনায় প্রাপ্তি কম হওয়ায় সীমিত আকারে লোডশেডিং হয়েছে। এ ছাড়া রক্ষণাবেক্ষণ কাজে প্রয়োজনীয় সময়ের জন্য লোডশেডিং করা হয়। সরকার শহর ও গ্রাম নির্বিশেষে সমতার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহে সচেষ্ট রয়েছে। সেচ মৌসুমে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ এবং বকেয়া পাওনা থাকলে নিয়মানুযায়ী বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ভূতুড়ে বিলের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে যাচাইপূর্বক প্রতিকার প্রদান করা হয় এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

এমপি মো. সোহরাব উদ্দিনের অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, বিগত ১৫ বছরে বিদ্যুৎ খাতে অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে। সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে তাৎক্ষণিক, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে নিবিড় তদারকির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ২৫ হাজার ৭৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। ফলে বিদ্যুতের স্থাপিত ক্ষমতা ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ ৩০ হাজার ৭৩৮ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। এ যাবত গত ৩০ এপ্রিল সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে ১৬ হাজার ৪৭৭ মেগাওয়াট। দেশে চাহিদার চেয়েও স্থাপিত বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বেশি। তবে করোনা মহামারি পরবর্তীতে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের কারণে পরিপূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কিছু কিছু স্থানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। এ ছাড়া অত্যধিক গরম ও দেশের কোথাও কোথাও দাবদাহের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

তিনি জানান, চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে আমরা বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ২০৩০ সালে ৩৯ হাজার ৩২৪ মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৭৪ হাজার ২৫৩ মেগাওয়াটে উন্নীত করার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।

এসআর/এসএসএইচ