ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে যোগ দিতে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষেরা। কেউ পরিবার নিয়ে, আবার কেউ পরিবারকে রেখে ফিরছেন। পাশাপাশি ঈদের ছুটিতেও জরুরি পেশায় নিয়োজিত যেসব মানুষ ঢাকায় ছিলেন, তারা এখন প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটাতে গ্রামে যাচ্ছেন। এ সংখ্যাটা অবশ্য খুব কমও নয়।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন কর্মজীবী মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল বুধবার (১৯ জুন) ঈদের ছুটি শেষে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো খুলেছে। তাই তারা কর্মস্থলে যোগ দিতে ঢাকায় ফিরছেন। কিন্তু মাঝে আবার সাপ্তাহিক ছুটি শুক্র ও শনিবার রয়েছে। আবার বাচ্চাদের স্কুল-কলেজ এখনো বন্ধ, তাই অনেকে পরিবার বাড়িতে রেখে ঢাকায় ফিরছেন। তাছাড়া যাদের বাড়ি ঢাকার আশপাশে তারা আজ অফিস শেষ করে সাপ্তাহিক ছুটি কাটাতে আবার বাড়ি যাবেন, সেই কারণেও পরিবার রেখে এসেছেন কেউ কেউ। 

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের দায়িত্বরতরা বলছেন, মঙ্গলবার (১৮ জুন) থেকেই ফিরতি ট্রেনের যাত্রা শুরু হয়েছে। ট্রেনে করে যেসব মানুষ ঢাকা ছেড়েছিলেন ঈদের আগে, তাদের অধিকাংশই এখন ফিরতে শুরু করেছেন। ঢাকায় ফেরা সবগুলো ট্রেন যাত্রীতে পরিপূর্ণ ছিল। ট্রেনের ফিরতি টিকিটও অনলাইনে বিক্রি হওয়ায় এবং শিডিউল বিপর্যয় না হওয়ায় বড় ধরনের কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না যাত্রীদের।

এদিকে, সরেজমিনে কমলাপুর রেলওয়ে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকায় ফেরা ট্রেনের যাত্রীদের প্ল্যাটফর্মে নেমে টিকিট দেখিয়ে স্টেশন ত্যাগ করতে হচ্ছে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে স্টেশনের গেটে দায়িত্ব পালন করছেন নিরাপত্তাকর্মী ও রেলওয়ের কর্মকর্তারা। অন্যদিকে টিকিট ছাড়া কাউকে স্টেশনের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

দিনাজপুর থেকে আসা রবিউল ইসলাম বলেন, পরিবারকে গ্রামে রেখে এসেছি। বাচ্চাদের স্কুল এখনো বন্ধ, তারা আরও এক সপ্তাহ বাড়িতে থাকুক। আগামী সপ্তাহে বাড়ি গিয়ে নিয়ে আসব।

তিনি আরও বলেন, আমার অফিস গতকাল থেকে শুরু হয়েছে। কাজের চাপ না থাকায় অফিসের বসকে ফোন করে একদিনের বাড়তি ছুটি নিয়েছি।

লাকসাম থেকে ঢাকায় ফেরা জহিরুল ইসলাম বলেন, একটি বেসরকারি এনজিওতে চাকরি করি। গতকাল পর্যন্ত ছুটি নিয়েছি। এখান থেকে এখন সরাসরি অফিসে চলে যাব। এবার ঈদ ভালো কেটেছে। বৃষ্টির কারণে তেমন গরমও ছিল না।

এদিকে, ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে যাচ্ছেন একটি মসজিদের ইমাম আল আমিন। তিনি বলেন, ঈদে ঢাকায় ছিলাম। আজ পরিবার নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। ২-৩ দিন থেকে আবার ফিরব।

আল-আমিনের মতো পরিবার নিয়ে সিলেট যাচ্ছেন গাড়িচালক স্বপন শিকদার। তিনি বলেন, ঈদের সময় ছুটি ছিল না। আবার তখন ট্রেনের টিকিট কাটার বাড়তি ঝামেলা ছিল। তাই এখন বাড়ি যাচ্ছি।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, তেমন কোনো শিডিউল বিপর্যয় হয়নি। সবকিছু ভালো চলছে।

তিনি আরও বলেন, গত মঙ্গলবার-বুধবার থেকে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। তবে আজ মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। বিশেষ করে অফিসগামী মানুষরা ঢাকায় ফিরে কর্মস্থলে যোগ দিচ্ছেন। শুক্রবার-শনিবার ঢাকায় ফেরা মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে।

এএইচআর/এসএসএইচ