দেশে দুদিন আগে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। তবুও ঘরমুখো মানুষের স্রোত থামেনি। ঈদের তৃতীয় দিনেও মানুষকে ঢাকা ছাড়তে দেখা গেছে। সে কারণে ঈদের আগের সময়ের মতো বাস কাউন্টারে সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।

বাস কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা বলছেন, আজ ঠিক ঈদের আগের দিনের মতো অবস্থা। প্রচুর মানুষ বাড়ি ফিরছে। তবে চাকরিজীবী ও জরুরি প্রয়োজনে ঢাকায়ও ফিরছেন অনেকে।

বুধবার (১৯ জুন) সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সায়দাবাদ এলাকার বাস কাউন্টারগুলো ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

যাত্রাবাড়ী বাস কাউন্টারের সামনে কথা হয় ঝালকাঠিগামী যাত্রী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। আনোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদের আগে যাইনি, তখন অনেক ভিড় ছিল। এখন তো দেখছি ঈদের আগের থেকে ভিড়। কোনো বাসেই টিকিট পাচ্ছি না। এখন লোকাল বাসে ভেঙে ভেঙে যেতে হবে।

নড়াইল যাবেন হাফেজ আবু নাঈম। তিনি একটি মাদ্রাসায় চাকরি করেন। ব্যস্ততার কারণে ঈদে যেতে পারেননি। আবু নাঈম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মনে করলাম ফাঁকা বাসে বাড়ি যেতে পারব। কিন্তু এখানে এসে দেখি মানুষ আর মানুষ। কোনো বাসেই তো সিট পাচ্ছি না। বাসের মধ্যে দাঁড়িয়ে হলেও আজ যাব।

বরিশাল-পটুয়াখালীগামী স্টার ডিলাক্স পরিবহনের যাত্রাবাড়ী কাউন্টারের প্রধান সজল খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ সারাদিনের আমাদের সব রুটের টিকিট শেষ হয়ে গেছে। গতকালের চেয়ে আজ যাত্রীদের চাপ অনেক বেশি। যাত্রীদের চাপ দেখে মনে হচ্ছে না যে ঈদ চলে গেছে।

ঈদ শেষে যাত্রীদের ঢাকায় ফেরার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুব কম যাত্রী ঢাকায় আসছে। আমাদের বাসগুলো সিট ফাঁকা নিয়ে ঢাকায় ফিরছে। আগামীকাল থেকে হয়ত মানুষ ঢাকা ফেরা শুরু করবে।

শরীয়তপুর পরিবহনের সুপারভাইজার রেজাউল সরদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, কোরবানির ঈদ তো, সবাই ঢাকা থেকে মাংস খেয়ে, আবার মাংস গ্রামে নিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে এত ভিড়। আজ বেশি ভিড়। ঈদের আগে এখানে এত ভিড় ছিল না। আজ অনেক বেশি ভিড়। আমাদের এটা কল্পনাতেও ছিল না।

এদিকে, ঈদের ছুটি শেষে আজ অফিস-আদালত, ব্যাংক-বিমা প্রতিষ্ঠান খুলেছে। এ কারণে অনেকে ঢাকা ফিরতে শুরু করেছেন। সায়দাবাদ টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা থেকে তিশা পরিবহনে অনেকে ঢাকা ফিরেছেন। কথা হয় তুষার আহমেদ নামে একজনের সঙ্গে। একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন তিনি।

তুষার আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আরও দু’একদিন গ্রামে থাকার ইচ্ছে থাকলেও উপায় ছিল না। কারণ ছুটি শেষ। আজ থেকে ব্যাংকে থাকতে হবে। তাই ঢাকায় ফিরলাম।

সোমবার (১৭ জুন) দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। ঈদ উপলক্ষ্যে ১৬, ১৭ ও ১৮ জুন (রোব, সোম ও মঙ্গলবার) তিনদিন ছুটি ছিল। এর আগে ১৪ ও ১৫ জুন (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। এ কারণে এবারের ঈদের ছুটি ছিল পাঁচদিন।

এমএইচডি/এসএসএইচ