ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনে বাবার সঙ্গে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছে শিশু ফাইজা। এতোদিন বইয়ের পাতায় যেসব পশু-পাখি দেখে এসেছে, চোখের সামনে তাদেরকে দেখে উচ্ছ্বসিত চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশুটি। তার ভাষায়, আমি বাঘ-সিংহ-ভাল্লুক ও ঈগলসহ অনেকগুলো পাখি দেখেছি। তবে ভাল্লুক আর সিংহ আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। শুধু ফাইজা নয়, তার মতো আরও অনেক শিশু চিড়িয়াখানায় আনন্দে মেতেছে।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) সরেজমিন দেখা যায়, দুপুর গড়াতেই দর্শনার্থীদের ভিড়ে ভরে উঠে চিড়িয়াখানা প্রাঙ্গণ। অধিকাংশই এসেছেন পরিবারসহ কেউ বা বন্ধুদের সঙ্গে এসেছেন।

সাধারণের ঈদুল আজহার দিন কোরবানিসহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন অনেকেই, ফলে চাইলেও পরিবারসহ ঘোরাঘুরি হয়ে ওঠে না। তাই আজ ঈদের দ্বিতীয় দিনে জমে উঠেছে নগরীর এই বিনোদনকেন্দ্রটি।

সাভার থেকে পরিবারসহ এসেছেন জসীম উদ্দিন। তিনি বলেন, গতকাল কোরবানির কাজে ব্যস্ত থাকায় আসতে পারিনি। তাই আজ চলে এলাম। খুবই ভালো লাগছে এখানে এসে। সবাই মিলে ঘুরছি।

আরেক দর্শনার্থী মোজাম্মেল এসেছেন টঙ্গী থেকে। তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতেই পরিবার নিয়ে একটু স্বাচ্ছন্দ্যে ঘোরাঘুরি করা যায়, তাই আজ চিড়িয়াখানায় আসা। অনেক কিছুই দেখলাম, ভালো লাগল।

পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা মো. ইব্রাহিম বলেন, কাজের চাপে পরিবার নিয়ে বের হওয়া হয় না। তাই ছুটিটাকে কাজে লাগিয়ে ঘুরতে এসেছি। বাচ্চারাও এখানে আসতে পেরে খুশি।

তবে চিড়িয়াখানায় এসে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পাচ্ছে শিশুরা। এতোদিন বইয়ের পাতায় যেসব পশুপাখি দেখে এসেছে, বাস্তবে সেসব দেখতে পেরে উচ্ছ্বসিত তারা। চিড়িয়াখানায় বাঘ রয়েছে ১৩টি, সিংহ আছে সাতটি, হাতি আছে পাঁচটি, জিরাফ আছে সাতটি, জেব্রা আটটি, জলহস্তী ১৩টি, ক্যাঙারু দুটি, ভাল্লুক চারটি, হায়েনা তিনটি এবং গন্ডার আছে একটি। এসব প্রাণীর মধ্যে বাঘ-সিংহের খাঁচার সামনেই শিশু দর্শনার্থীর ভিড় বেশি।

কথা হয় শিশু রাকিবের সঙ্গে। তার ভাষায়, এখানে এসে খুব খুশি লাগছে। বাঘ-সিংহ দেখে ভয়ও লেগেছে, ভালোও লেগেছে। আরেক শিশু তন্ময় বলে, চিড়িয়াখানা এসে খুব ভালো লাগছে। বাঘ দেখেছি, সিংহ দেখেছি, হাতি দেখেছি, আরো অনেক কিছু দেখব।

এ ছাড়া, চিড়িয়াখানার সঙ্গেই রয়েছে শিশুপার্ক। সেখানেও ছিল শিশুদের সরব সমাগম। বিভিন্ন রাইডে চড়তে দেখা গেছে তাদের। অন্যবারের তুলনায় এবারের ঈদে চিড়িয়াখানার নিরাপত্তা ছিল লক্ষণীয়। অযাচিত কোনো হকার বা ভিক্ষুকের ভোগান্তি ছিল না। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় সরব ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

ওএফএ/এমজে