শহুরে জীবনে গৃহপালিত পশু-পাখি তো দূরে থাক, কংক্রিট আর পিচ ঢালাইয়ের ভিড়ে মাটির দেখা পাওয়াই ভার। এখানে বেড়ে ওঠা শিশু-কিশোররা ‘গরু একটি গৃহপালিত পশু, এটি ঘাস খেতে পছন্দ করে’, কিংবা ‘কাঁঠাল পাতা ছাগলের প্রিয় খাবার’ এসব পাঠ্য বইয়ের পাতায় পড়া আর রচনা হিসেবে পরীক্ষার খাতায় লেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তবে, কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে বাসা বাড়ির নিচে একাধিক গরু-ছাগলের উপস্থিতি ছোট্ট শিশুদের দিয়েছে বাড়তি আনন্দ। গরু-ছাগলকে নিজ হাতে ঘাস, খড়, ভূসি, পানি খাওয়ানো এবং কাছে ঘেঁষার চেষ্টা তাদের উৎফুল্লতা বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুন।

রোববার (১৬ জুন) বিকেলে ধানমন্ডির নায়েম রোডের আবাসিক এলাকা থেকে গরুকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য বেশ কয়েকজন শিশু-কিশোরকে পার্শ্ববর্তী ঢাকা কলেজের মাঠে নিয়ে আসতে দেখা যায়। মাঠে এনে হাতে ঘাস তুলে গরুর কাছে দিতে দেখা যায় কয়েকজনকে।

এদের মধ্যকার সাত বছর বয়সী শুয়াইব হাসান বলেন, আমাদের গরুটা অনেক ভালো। কাছে গেলেও গুঁতো দেয় না। আমরা নিজেরাই বাসা থেকে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছি। একেবারেই শান্ত।

রিয়াজ নামের আরেক কিশোর বলে, মাঠে ঘাস খাওয়ানোর জন্য ওকে (গরু) নিয়ে এসেছি। কালকে এই গরু কোরবানি দিয়ে দিলে আমাদের সবারই অনেক কষ্ট লাগবে।

মিরপুর সড়কের পার্শ্ববর্তী যাদব ঘোষের গলির ভেতরেও দেখা যায় কোরবানির পশুকে ঘিরে শিশু-কিশোরদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস।

জুনায়েদ হাসান নামের এক শিশু বলে, এই প্রথমবার আমি বাবার সাথে হাটে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে নিজেই পছন্দ করে এই গরু কিনে এনেছি। বাসার নিচে গ্যারেজেই বেঁধে রাখা হয়েছে। আমরাই নিজ হাতে খাবার দিয়েছি। অনেক আনন্দ লাগছে।

আগামীকাল সোমবার সারা দেশে যথাযোগ্য মর্যাদা এবং ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সারা দেশে উদযাপিত হবে ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ। এ দিন ঈদের নামাজের পরই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি করবেন। অবশ্য জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ ছাড়াও ১১ ও ১২ তারিখেও কোরবানি করা যাবে।

জানা গেছে, প্রতি বছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৭টায়, দ্বিতীয় জামাত ৮টায়, তৃতীয়টি ৯টায়, চতুর্থটি সকাল ১০টায় এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে।

আরএইচটি/কেএ