রাত পোহালেই কোরবানির ঈদ। সকালে ঈদের নামাজের পর সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে রাজধানীসহ সারাদেশেই জবাই করা হবে গরু-ছাগল। আর এসব পশুর মাংস সংরক্ষণ ও বিতরণের জন্য একেকজন একেক পদ্ধতি পদ্ধতি অবলম্বন করেন।

এসব পদ্ধতির মধ্যে পলিথিন সহজলভ্য হওয়ায় ঈদের মৌসুমে এর চাহিদা বেড়ে যায় অনেক। তাই ঈদের আগের দিন আজ রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলোতে ধুম পড়েছে পলিথিন বিক্রির। প্রয়োজন মতো ক্রেতারা কেজি হিসেবে বিভিন্ন সাইজের পলিথিন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

রোববার (১৬ জুন) বিকেলে রাজধানীর নিউমার্কেট এবং আজিমপুরের বিভিন্ন হার্ডওয়্যার দোকান, কাঁচা বাজার সংলগ্ন বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে বান্ডিল করা পলিথিন বিক্রি করতে দেখা গেছে। একই সঙ্গে চাহিদা রয়েছে প্লাস্টিকের ব্যাগেরও।

বিক্রেতারা বলেন, কুরবানির দিন মাংস বিতরণ কিংবা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে পাঠানোর জন্য পলিথিন এবং প্লাস্টিকের ব্যাগ দুটোই অতি প্রয়োজনীয় জিনিস। প্রতিবছরই কুরবানির ঈদের আগের দিন এই দুটি পণ্য অনেক বেশি বিক্রি হয়। কেউ চাইলে পলিথিন কেজি হিসেবে নিতে পারেন আবার প্রয়োজন অনুসারে পিস হিসেবেও নিতে পারেন। এক্ষেত্রে পলিথিন এবং প্লাস্টিকের ব্যাগের দাম নির্ধারণ করা হয় মান এবং আকারের উপর ভিত্তি করে। তবে পলিথিন মানভেদে ২০০ থেকে ২৭০ টাকা কেজি এবং প্লাস্টিকের ব্যাগ ১০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ টাকা পর্যন্ত পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী, অল্প থেকে শুরু করে অধিক পরিমাণে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

নিউমার্কেটের খায়ের হার্ডওয়্যারের বিক্রয় কর্মী আবুল কাশেম বলেন, গত দুই দিন ধরে পলিথিন অনেক ভালো বিক্রি হচ্ছে। কোরবানির মাংস সংরক্ষণের জন্য ক্রেতারা এগুলো নিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত আমরা ৫০ কেজি পলিথিন বিক্রি করেছি। বিভিন্ন সাইজের পলিথিন রয়েছে। সর্বনিম্ন ১০ ইঞ্চি লম্বা এবং ১২ ইঞ্চি প্রস্থ এবং সর্বোচ্চ ১৫ ইঞ্চি লম্বা এবং ২০ ইঞ্চি প্রস্থের পলিথিন আমাদের দোকানে রয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের পলিথিন ২৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। এছাড়া ২০০ টাকা কেজি দরের পলিথিনও আছে।

কুমিল্লা হার্ডওয়্যার নামে পার্শ্ববর্তী আরেকটি দোকানের বিক্রয় কর্মী মাহিম বলেন, আমাদের দোকানগুলোতে ছুরি, কুড়াল, রেতসহ গরু ছাগল কাটার বিভিন্ন উপকরণ রয়েছে। বেশ ভালোই বিক্রি হচ্ছে। আবার পলিথিন ও প্লাস্টিকের ছোট-বড় ব্যাগও বিক্রি করছি। কোরবানির মাংস যারা ফ্রিজে রাখে তারা পলিথিন কিনে নিচ্ছেন। পিস হিসেবে আবার কেজি হিসেবেও বিক্রি করছি।

মরিয়ম আক্তার নামে এক ক্রেতা বলেন, সারা বছর মাছ-মাংস রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পলিথিন বাজার করলে এমনিতেই পাওয়া যায়। তবে কোরবানির ঈদে বাড়তি পলিথিন কিনতে হয়। কারণ ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণ করার জন্য এত বেশি পলিথিন নিজের সংগ্রহে থাকে না। আর পলিথিনে মোড়ানো ছাড়া ফ্রিজে মাংস রাখতেও পারব না। সেজন্য দেড় কেজি পলিথিন নিয়েছি। এটি ব্যবহারের পরও অতিরিক্ত যা থাকবে সেটিতে সারা বছর চলবে।

দেশে ২০০২ সালে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করে আইন পাস করা হয়। যেখানে বলা হয়েছে ‘পলিথিনের শপিং ব্যাগ বা অন্য যেকোনো সামগ্রী যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর, এসব উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়  বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন, মজুত এবং পরিবহন ইত্যাদি নিষিদ্ধ’। দুই যুগ পেরিয়ে গেলেও এই আইন মানেন না পলিথিন  উৎপাদক ও বিপণনে জড়িতরা।

আরএইচটি/এসকেডি