জাতীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৭টায়। সেখানে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করবেন। সে লক্ষ্যে এরইমধ্যে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)।

ডিএসসিসির আওতাধীন হওয়ায় প্রতি বছর জাতীয় ঈদগাহের ব্যবস্থাপনার কাজ করে সংস্থাটি। এ বছরও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল-১ প্রকৌশল বিভাগের আওতায় জাতীয় ঈদগাহের কাজ চলছে।

জানা গেছে, জাতীয় ঈদগাহে প্রায় ২৫০ জন অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও ৮০ জন গুরুত্বপূর্ণ নারী জামাতে অংশ নেবেন। এছাড়া সাধারণ পুরুষ প্রায় ৩১ হাজার এবং নারী ৩ হাজার ৫০০ জন মিলিয়ে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ নামাজে অংশ নেবেন।

ডিএসসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঈদগাহ মাঠে ১০টি এয়ার কুলারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত ফ্যান ও লাইটের ব্যবস্থা আছে। সেখানে সিলিং ফ্যান ৫৫০টি, স্ট্যান্ড ফ্যান ১৫০টি, মেটাল লাইট ৪০টি ও টিউব লাইট ৭০০টি রাখা হয়েছে। পাশাপাশি খাবার পানির ব্যবস্থা, ভিআইপি কাতারে জায়নামাজের ব্যবস্থা, ভ্রাম্যমাণ টয়লেটের ব্যবস্থা, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা এবং বৃষ্টির পানি নিরোধক সামিয়ানার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া জাতীয় ঈদগাহে ভিআইপি, নারী ও পুরুষের প্রবেশের জন্য আলাদা ৩টি গেট করা হয়েছে।

আরও জানা গেছে, জাতীয় ঈদগাহে ভিআইপি (পুরুষ) কাতার হবে ৫টি, ভিআইপি (নারী) ১টি, জনসাধারণের মধ্যে পুরুষ কাতার ৬৫টি ও নারী কাতার ৫০টিসহ ১২১টি কাতার হবে। এছাড়া জাতীয় ঈদগাহে অজুখানায় একসঙ্গে ১১৩ জন পুরুষ ও ২৭ জন নারীসহ ১৪০ জন একসঙ্গে অজু করতে পারবেন।

এদিকে বুধবার (১২ জুন) সকালে জাতীয় ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ডিএসসিসির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ৩৫ হাজার মুসল্লির ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য জাতীয় ঈদগাহ প্রস্তুত করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

মেয়র বলেন, জাতীয় ঈদগাহে রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, বিচারপতিরাসহ ভিআইপিরা ঈদের নামাজ আদায় করবেন। সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বৃষ্টিতে যেন নামাজের বিঘ্ন না ঘটে সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। মহিলাদের জন্য নামাজের আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মুসল্লিরা স্বাচ্ছন্দ্যে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

অন্যদিকে রোববার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে এবারের ঈদ জামাতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। ঈদ কেন্দ্রিক সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই। তবে সবকিছু মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, সারা দেশের মতো ঢাকা মহানগরীতেও যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এ জামাতে রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা নামাজ আদায় করবেন।

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পাঁচটি জামাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে সব জামাতের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তার জন্য পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য পার্কিং ও ডাইভারশন থাকবে। পোশাকধারী পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। পেট্রলিং, সিসিটিভি ক্যামেরা মনিটরিংসহ নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাবের পেট্রোল টিম দায়িত্ব পালন করবে। আশা করি ঈদের জামাত সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হবে।

এদিন সকালে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ঈদের দিনে ঢাকায় জাতীয় ঈদগাহে সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, শোলাকিয়া, রংপুর, দিনাজপুরে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এসব ঈদ জামাতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাসসহ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। র‍্যাব সদর দপ্তর থেকে কন্ট্রোলরুম স্থাপন করে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা মনিটরিং করা হবে।

এমএসি/জেডএস