যেকোনো মাংসের সঙ্গে কয়েক টুকরো চুইঝাল মাংসের স্বাদ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে গরু ও খাসির মাংসের স্বাদ বাড়াতে এর জুড়ি নেই। তাই বাগেরহাটে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে বেড়েছে চুইঝালের চাহিদা। আর চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দামও।

শহরের কাঁচাবাজারে দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে শুধু চুইঝাল বিক্রি করছেন জামান শেখ। প্রতিদিন সকালে চুইঝালের পসরা নিয়ে বসেন তিনি, থাকেন বাজার শেষ না হওয়া পর্যন্ত। এই চুইঝাল বিক্রি করে দুই ছেলে ও এক মেয়েকে লেখাপড়াসহ সংসারের সব খরচ চালান তিনি। 

জামান শেখ বলেন, বাগেরহাটে চুইঝালের কদর আগের তুলনায় বাড়ছে। বিশেষ করে ঈদের সময় চাহিদা বাড়ে সবচেয়ে বেশি। আগে যে চুই ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রেতার বাড়ি থেকে পাইকারি দরে কিনে আনতেন, ঈদের কারণে সেই চুই এখন কিনতে হচ্ছে ৮০০ টাকায়। তবে মূল চুইয়ের দাম সবচেয়ে বেশি। তিনি আরো বলেন, আমার কাছে  ৫০০ টাকা থেকে ১২শ টাকা কেজির চুইঝাল রয়েছে।  

আরেক বিক্রেতা মোহাম্মদ সোহাগ হাওলাদার বলেন, হঠাৎ চুইঝালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। এ কারণে বাজারে চুইঝালের দাম বেড়েছে। স্থানীয় জাতের যে চুইঝাল আগে প্রতি মণ ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হতো, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ টাকায়। মোটা ও মূল চুইয়ের দাম সবচেয়ে বেশি।

শহরে চুইঝাল কিনছিলেন আকলিমা বেগম বলেন, এখন চুইঝাল ছাড়া গরুর মাংসের তেমন স্বাদই পাই না। প্রতিবছর ঈদের সময় বেশি করে চুইঝাল কিনে রাখি। ঢাকায় থাকা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতেও পাঠাতে হয়। এবার দেখছি দামটা বেশি। 

বাজারে চুইঝালের ক্রেতা আদিম খান বলেন, আমরা শুধু গরুর মাংস না, সব ধরনের মাংস, বড় মাছ ও মজাদার খাবারেই চুইঝাল খাই। তবে কোরবানি উপলক্ষ্যে দাম কিছুটা বেড়েছে। ঈদের সময় চুইঝাল দিয়ে রান্না করা মাংস অতিথিদের খুবই পছন্দের। দাম একটু বাড়লেও, মাংস খেতে চুইঝাল লাগবেই। চুইঝালের মাংস রান্নার স্বাদই অন্যরকম লাগে।

বাগেরহাটের  মানুষের কাছে চুইঝাল ব্যাপক জনপ্রিয়। দিনদিন এর জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এই চুইঝালের শহরে ছোট বড় স্থানী-অস্থায়ী মোট ৬০টি দোকান রয়েছে।  

বাগেরহাট শহরের বাইরে ও জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বাজারে বিক্রি হওয়া এই চুইঝাল অনেক দোকান ঘুরে দেখা যায়, চিকন ডাল কেজি ৪৫০-৫০০ টাকা, একটু মোটা ডাল ৬০০-৬৫০ টাকা, বড় ডাল ১১০০-১২০০ টাকা, গাছ-কাণ্ড ১২০০-১৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

শেখ আবু তালেব/জেডএস