ঘড়ির কাটায় তখন সকাল ৯টা বেজে ৫৮ মিনিট। ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের সেন্ট্রাল মাইকে ঘোষণা এলো, অল্প সময়ের মধ্যে তিন নম্বর প্লাটফর্মে এসে দাঁড়াবে একতা এক্সপ্রেস। এই ঘোষণা শোনার দুই মিনিটের মধ্যে প্ল্যাটফর্মের প্রায় ৭০০ মিটার জায়গা মানুষের ভিড়ে পরিপূর্ণ হয়ে গেল। লাইনের দিকে তাকিয়ে দেখছেন সবাই, কখন আসবে ট্রেন।

পরে সকাল ১০টা ২ মিনিটে স্টেশনের তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে হাজির হলো পঞ্চগড়গামী আন্তঃনগর ট্রেনটি। মুহূর্তেই ট্রেনের সামনে ব্যাপক জটলা সৃষ্টি হলো। যে যেভাবে পারলেন ট্রেনে উঠলেন। অনেকে ভেতরে জায়গা না পেলে দরজায় ঝুলেই নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিলেন। অবশেষে ‘বাদুড়ঝোলা’ যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়লো একতা এক্সপ্রেস।

শুক্রবার (১৪ জুন) সকালে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের তিন নম্বর প্লাটফর্মে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ১০টা ২ মিনিটের তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে থামে একতা এক্সপ্রেস। ট্রেনটি থামার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিটি কোচের দরজার সামনে প্রচুর লোকের ভিড় জমে যায়। দরজার সামনে অতিরিক্ত ভিড় হওয়ায় জানালা দিয়ে উঠতে চেষ্টা করছিলেন কেউ কেউ। ভিড়ের কারণে ট্রেনের ভেতরের যাত্রীরা এখানে নামতেই পারছিলেন না। মোটামুটি পাঁচ মিনিটের মধ্যে যাত্রীতে ভর্তি হয়ে গেল পুরো ট্রেন। জায়গা না পেয়ে অনেক কষ্টে দরজায় দাঁড়িয়ে রইলেন অনেকে। কেউ কেউ দরজায় ঝুলেই রওনা দিলেন।

সাধারণত প্রতিটি কোচে ২৫ শতাংশ স্ট্যাডিং টিকিট দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতি কোচে অনেক মানুষকে দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করতে দেখা গেছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঢাকা-পঞ্চগড় রেলপথের দূরত্ব ৬৩৯ কিলোমিটার। এটিই দেশের সবচেয়ে দূরত্বের ট্রেন সার্ভিস।

একতা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী নুরুজ্জামান বলেন, এই ট্রেন মিস করলে আমার বাড়ি যেতে অনেক সময় লাগে এবং অনেক টাকা খরচ হবে। ট্রেনে চড়তে পারলে যে কোনোভাবে বাড়ি যাওয়া যাবে। দূরের রাস্তা, এভাবেই ঝুঁকি নিয়েই বাড়িতে যাই সবসময়।

আসিফ খান নামের এক যাত্রী বলেন, ভাই টিকিট পাইনি। কিন্তু বাড়ি তো যেতে হবে। টিকিট না পাওয়ার রিস্ক এভাবেই নিছি। আল্লাহ ভরসা বাড়ি পৌঁছে যাব।

জানা গেছে, সাধারণত প্রতিটি ট্রেন ঢাকায় ঢোকার পর ক্লিনিং ও ওয়াটারিংয়ের জন্য অন্তত এক ঘণ্টা সময় পায়। একতা এক্সপ্রেস ৭০৬ নম্বর ট্রেনটির সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে ঢাকায় থাকার কথা ছিল। তবে ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট দেরিতে আসায় ট্রেনটি সেই সুযোগও পায়নি বলে জানায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

এমএইচএন/কেএ