কৃষিতে ভর্তুকি কমানোয় সংসদে অর্থমন্ত্রীকে নিয়ে সমালোচনা
জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কৃষিতে ভর্তুকি কমানোয় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সমালোচনা করেছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। তিনি বলেছেন, কৃষিনির্ভর দেশে কীভাবে অর্থমন্ত্রী ভর্তুকি কমালেন আমি নিশ্চিত নই। এর কোনো যুক্তি দেখি না। মূল্যস্ফীতি কমাতে হলে কৃষির উৎপাদন বাড়াতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, এই বছর মূল্যস্ফীতি নিয়ে আলোচনা করছি। যার জন্য ৭৩৯টি দ্রব্যমূল্যকে বিবেচনা করা হয়, তারমধ্যে পাঁচশর অধিক হচ্ছে কৃষিজাত পণ্য। কৃষি উৎপাদন বাড়াতে কৃষককে ভর্তুকি দিতে হবে। অথচ কৃষিতে ৩২ দশমিক ৭ শতাংশ ভর্তুকি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কৃষিনির্ভর দেশে কীভাবে অর্থমন্ত্রী ভর্তুকি কমালেন আমি নিশ্চিত নই। এর কোনো যুক্তি দেখি না। গত বছর যেটা ছিল, সেটা বহাল রাখতে হবে।
ভিজিএফে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
দেশের অর্থনীতির বড় দায় খেলাপি ঋণ উল্লেখ করে এমপি শাহরিয়ার জাহেদী বলেন, বর্তমানে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। যেটা আমাদের দেশের জন্য অনেক বড়। যদিও শতাংশের দিক থেকে এটি ১১ দশমিক ১০ শতাংশ। এরমধ্যে আদায় হয়েছে ৫৮ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন মামলার কারণে দুই লাখ ১২ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা সরকারের অনাদায়ি হয়ে আছে। সারাদেশে আদালতে আটকে থাকা মামলা রয়েছে দুই লাখ ৮২ হাজার ৯৬টি। এ মামলা কীভাবে নিষ্পত্তি হবে জানা নেই। যে ঋণ দেওয়া হয়েছে তার ২৫ শতাংশ আমরা পাচ্ছি না। এটা আমাদের অর্থনীতির জন্য বড় দায়।
আরও পড়ুন
আওয়ামী লীগের দুর্দিনের নেতাকর্মী ও ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য আলাদা কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী নাছিম। তিনি বলেন, ১৯৭৫-৮১, ১৯৮১ হতে ১৯৯৬, ২০০১-০৬ এবং ২০০৭ থেকে ২০০৮ এই চারটি পর্যায়ের আন্দোলন-সংগ্রামের গবেষণা করার জন্য একটি কমিশন গঠন করতে হবে। এই চার পর্যায়ে যারা নিহত হয়েছেন তাদের অফিসিয়ালি শহীদের মর্যাদা দিতে হবে।
মাসে অন্তত দুইদিন করে আওয়ামী লীগের দুর্দিনের নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
বাজেটের বরাদ্দ করা অর্থ যথাযথ ব্যবহার না করলে জনগণ সুফল পাবে না উল্লেখ করে আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী নাছিম বলেন, সরকারি ক্রয়নীতি সংশোধনের সময় আবার এসে গেছে। এটাকে যথাযথভাবে সংশোধন ও সমন্বয় করে সরকারের টাকা অপচয়ের পথ বন্ধ করার জন্য অর্থমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান করছি।
তিনি বলেন, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে কারণে সারা বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক শূন্যতায় ভুগছে। প্রায় ৬০ হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য আছে। এনটিআরসির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের বিধান বাতিল করে যুগোপযোগী ও বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে একমাত্র উপায়।
এসআর/এমএ