ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের হত্যাকাণ্ডের পর আসামিরা কার কার কাছে বিষয়টি শেয়ার করেছে তা তদন্ত চলছে। ছবি দিয়ে কেউ আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে কি না, কাদের মাধ্যমে আর্থিক লাভবান হয়েছে সবগুলো বিষয় তদন্ত করে বের করা হচ্ছে।

আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কিলিং মিশনে যারা অংশ নিয়েছিল কলকাতা থেকে এমপি আনারের ছবি হোয়াটসঅ্যাপে কার সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে এবং এতে কোনো আর্থিক সংশ্লিষ্টতা ছিল কি না সব বিষয়ে তদন্ত চলছে।

হারুন বলেন, সকল তথ্য-উপাত্ত বিচার-বিশ্লেষণ করে মনে করেছি ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। এজন্য তাকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে এনেছি। তার রিমান্ড চলছে, তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। ঘটনা ডিবি ওয়ারী বিভাগ তদন্ত করছে। বাংলাদেশে অপহরণ মামলা হয়েছে, অন্যদিকে ভারতে হত্যা মামলা হয়েছে। দু দেশের উদ্দেশ্য অভিন্ন।

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, বাংলাদেশে গ্রেপ্তার আসামি ও ভারতে গ্রেপ্তার আসামিদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূল ঘাতক আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়াসহ অন্যরাও আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী করেছেন। হত্যাকাণ্ডটি ভারতে সংঘটিত হয়েছে এবং সব আসামি বাংলাদেশি। হত্যাকাণ্ডের পর প্রায় সব আসামি বাংলাদেশে চলে আসে।

হত্যাকাণ্ডের পর দুই কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে হারুন বলেন, এগুলো আমরাও শুনেছি, সবকিছু তদন্ত করছি।

হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন বাংলাদেশ থেকে দিল্লীর পর কাঠমান্ডু, এরপর দুবাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন। তাকে আমরা ধরতে না পারলেও মোটামুটি বাকি সব আসামিদের বিষয়ে জানতে পেরেছি। আসামিদের অনেককেই গ্রেপ্তার করেছি, ভারতে জিহাদ গ্রেপ্তার হয়েছে। এ ছাড়া কাঠমান্ডু থেকে গ্রেপ্তার সিয়ামকে ভারতে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রয়োজন মনে করলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে যাবো। 

হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীনের ব্যবহৃত দুটি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

গত ১২ মে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে ভারতে যান এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন চিকিৎসক দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি।

বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচদিন পর ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলে না তিনবারের এই সংসদ সদস্যের। ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় সঞ্জীবা গার্ডেনস নামের একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে আনোয়ারুল আজীম খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া যায় রক্তের ছাপ।

এমএসি/এনএফ