দুদকের অভিযান
ঘুষ লেনদেন ও হয়রানিতে ‘নিষ্ক্রিয়’ পানগাঁও কাস্টমস হাউজ
সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষ দাবি ও হয়রানির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পানগাঁও কাস্টমস হাউজে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানে ভ্রাম্যমাণ স্ক্যানার অকেজোসহ নানা হয়রানিতে সার্বিক কার্যক্রমে বন্দরটি প্রায় নিষ্ক্রিয় অবস্থায় পাওয়া গেছে।
রোববার (৯ জুন) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে দুদক উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পানগাঁও কাস্টমস হাউজের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আমদানিকারকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে পানগাঁও বন্দর ও কাস্টমস হাউজ সরেজমিন পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা করে দুদক টিম। এছাড়া, সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য গ্রহণ করা হয়। অভিযানে সংগৃহীত রেকর্ডপত্র বিশ্লেষণ করে দুদক টিম কমিশনে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।
জানা গেছে, অভিযানে সিএন্ডএফ এজেন্ট ও তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগের বিষয়ে অধিকতর তথ্য সংগ্রহ করে দুদক টিম। পরিদর্শনকালে বন্দরটি প্রায় নিষ্ক্রিয় অবস্থায় পাওয়া যায়। বন্দরের একমাত্র ভ্রাম্যমাণ স্ক্যানারটি অকেজো অবস্থায় পায় দুদক টিম। অভিযানে সার্বিক পর্যালোচনায় উল্লিখিত কাস্টমস দপ্তরের বাণিজ্যিক ও দাপ্তরিক কার্যক্রম অত্যন্ত সীমিত মর্মে টিমের কাছে পরিলক্ষিত হয়। বন্দরের নথিপত্র প্রাথমিকভাবে পর্যালোচনায় বর্তমানে বন্দরটিতে প্রতি মাসে গড়ে মাত্র দুই থেকে তিনটি জাহাজ আসে বলে দুদক টিম তথ্য পায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কাস্টমসের স্বেচ্ছাচারিতা ও সিদ্ধান্তহীনতায় পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল (আইসিটি) দিয়ে পণ্য আমদানি শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। সিপাহি থেকে কমিশনার পর্যন্ত সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী হয়রানির অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। এতে আমদানিকারকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এ আইসিটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ফলশ্রুতিতে গত দুই সপ্তাহে একটি বিল অব এন্ট্রিও (বি/ই) জমা পড়েনি।
বিচারাদেশ টাইপ, সিএন্ডএফ লাইসেন্স নবায়ন ও আউটপাশ শাখার দায়িত্ব পালন করেন কমিশনার দপ্তরের এক কর্মকর্তা। তিনি আউটপাস ইস্যু করতে ট্রাকপ্রতি দুই হাজার টাকা ও বিচারাদেশ টাইপ করতে ৫০০-২০০০ টাকা ঘুষ নেন। কমিশনারের অত্যন্ত আস্থাভাজন ও আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় সিএন্ডএফ এজেন্ট ও আমদানিকারকরা হয়রানি এড়াতে মুখ বুঝে তাকে ‘ম্যানেজ’ করেন। এমনকি কাস্টমসে কর্মরত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং কমিশনারের নাম ভাঙিয়ে নির্দেশনাও দেন। নানা উছিলায় বন্দরটি অচল করে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে।
আরএম/কেএ