দুদকের মামলা
মাদক কারবারে কুলি থেকে কোটিপতি
চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারিদের একজন ইউছুফ। এক সময়ে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে কুলির কাজ করা ওই ব্যক্তি মাদক কারবারের মাধ্যমে কোটিপতি হয়েছেন।অভিযোগ ছিল দুইশ কোটি টাকার মালিক তিনি। তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে প্রায় তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মিলেছে।
যে কারণে রোববার (৯ জুন) সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ দুদকের উপপরিচালক মো. আব্দুল মাজেদ বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিজ্ঞাপন
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কাগজপত্রে তার পরিচয় মহিনী ট্রান্সপোর্ট ও মহিনী পোল্ট্রি ফার্মের মালিক মো. ইউছুফ। দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাই ও পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ৮২ লাখ ৯৮ হাজার ৪৪৬ টাকা। মো. ইউসুফ ২০১৫-১৬ করবর্ষ থেকে ২০২২-২০২৩ করবর্ষ পর্যন্ত গৃহসম্পত্তি খাতে অর্থাৎ বাড়িভাড়া খাতে মোট ৩৩ লাখ ৬২ হাজার ৭৭০ টাকা আয় প্রদর্শন করে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। একই সময়ে তার পারিবারিক ব্যয় ও আয়কর প্রদান খাতে মোট ৪৪ লাখ ৬৭ হাজার ৮৯৬ টাকা ব্যয় দেখিয়েছেন, যা আয়কর বিভাগ মেনে নিয়েছে। তিনি তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের পেছনে উৎস হিসেবে মহিনী মৎস্য খামারের আয় ৮২ লাখ ৯৯ হাজার ৯৩২ টাকা, মহিনী ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির আয় ১৬ লাখ ৭১ হাজার ৬৬৭ টাকা, মহিনী পোল্ট্রি খামারের আয় ১ কোটি ৪৪ লাখ ৬৩ হাজার ৩৭ টাকা এবং মহিনী ডেইরি ফার্মের আয় ২৫ লাখ ৯৫ হাজার ৪৮৬ টাকা এবং গৃহসম্পত্তি (বাড়ি ভাড়া) খাতে ৩৩ লাখ ৬২ হাজার ৭৭০ টাকা প্রদর্শন করেছেন। এসব খাতে তিনি সর্বমোট ৪ কোটি ২৭ লাখ ৯২ হাজার ৮৯২ টাকার আয়ের উৎস প্রদর্শন করেছেন।
কিন্তু সরেজমিন পরিদর্শনে তার মোহিনী ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির অস্তিত্ব পাওয়া গেলেও মোহিনী মৎস্য খামার, মোহিনী পোল্ট্রি খামার ও মোহিনী ডেইরি ফার্মের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ফলে তার মোহিনী ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির আয়, গৃহ সম্পত্তির মোট ৫০ লাখ ৩৪ হাজার ৪৩৭ টাকা বৈধ হিসেবে মেনে নেয় দুদক। অবশিষ্ট ২ কোটি ৭৭ লাখ ৩১ হাজার ৮০৫ টাকার কোনো বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। যা জ্ঞাত বহির্ভূত বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে। আসামির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মো. ইফসুফ মাত্র সাত বছর আগেও চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে কুলির কাজ করতেন তিনি। প্রায় দেড়শ থেকে দুইশ কোটি টাকার সম্পদের মালিক। চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারিদের শীর্ষে তিনি।
আরএম/জেডএস