কারাগারে দুই আসামির চুক্তি
মোটরসাইকেল চুরি করে দেওয়ার শর্তে জামিন, অতঃপর...
চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী থানার মোটরসাইকেল চুরির মামলায় কারাগারে গিয়েছিলেন মো. আবিদ হোসেন শ্রাবণ (২০)। জেলে চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার অপহরণ মামলার আসামি মো. আজিজুর রহমানের (২৪) সঙ্গে তার সখ্যতা হয়। শ্রাবণের কাছ থেকে মোটরসাইকেল চুরির কৌশল জেনে অবাক হয় আজিজ। শ্রাবণকে জামিন করানোর যাবতীয় খরচ বহনে রাজি হয় আজিজ।
বিনিময়ে কারাগার থেকে বের হয়ে যেসব মোটরসাইকেল চুরি করবে সেগুলো আজিজকে বিক্রি করার শর্ত দেওয়া হয়। রাজি হলে নিজে কারাগার থেকে বের হয়ে শ্রাবণকে জামিন করায় আজিজ। এদিকে শ্রাবণ কারাগার থেকে বের হয়ে মাত্র ১০ দিনে ৪টি মোটরসাইকেল চুরি করে দেয় আজিজকে।
বিজ্ঞাপন
তবে শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার (৬ জুন) নগরের কোতোয়ালি থানার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন দুজনেই। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার হয় তাদের চার সহযোগীও। তারা হলেন- মো. রাফি (৩১), মো. আব্দুল্লাহ আল আবেদ ওরফে তুহিন (২৪), মো. শাহাদাত হোসেন ওরফে খোকা (২৭) ও মো. জমির হোসেন (২০)। তাদের কাছ থেকে শ্রাবণের চুরি করা চারটি চোরাই মোটরসাইকেল এবং তিনটি মাস্টার কী (চাবি) উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, জামিনের পর চট্টগ্রাম মহানগরসহ আশপাশ এলাকায় মোটরসাইকেল চুরি শুরু করে শ্রাবণ। ১০ থেকে ১২ দিনে শ্রাবণ বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪টি মোটরসাইকেল চুরি করে আজিজ ও তার বন্ধু রাফির কাছে হস্তান্তর করে। রাফি চোরাই বাইক কেনা-বেচার লাভের অংশ থেকে বাইক প্রতি ৫ হাজার টাকা নেয় এবং শ্রাবণকে আজিজের দেওয়া সমস্ত খরচ বহন করে। প্রত্যেকটি মোটরসাইকেল হস্তান্তরের সময় দামের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা পরবর্তী মোটরসাইকেল পাওয়ার জন্য আজিজ শ্রাবণকে অ্যাডভান্স মানি হিসেবে দেয়।
আজিজ এবং রাফি শ্রাবণ থেকে মোটরসাইকেল নেওয়ার পর তুহিনের মারফত রাঙ্গুনিয়া থানা এলাকার খোকার নিকট পাঠায়। খোকা প্রতি বাইকে ১০ হাজার টাকা লাভ ধরে জমিরের নিকট বিক্রি করে। জমির মোটরসাইকেলগুলো লিগ্যাল মোটরসাইকেল বলে স্থানীয়দের কাছে বাজার মূল্যে বিক্রি করে।
অভিযানে নেতৃত্বে থাকা কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান শুভ ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলে বসে আসামি শ্রাবণ ও আজিজের মধ্যে মোটরসাইকেল চুরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। জামিন করানোর শর্ত হিসেবে শ্রাবণকে মোটরসাইকেল চুরি করে দেওয়ার শর্ত দেয় আজি। যেই কথা সেই কাজ। দুজনেই জেল থেকে বের হয়ে ১০ থেকে ১২ দিনে ৪টি মোটরসাইকেল চুরি করে। চুরি হওয়া এসব মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। চক্রের মূল হোতাসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, আসামি শ্রাবণের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি, পাহাড়তলী, হালিশহর, চকবাজার, আকবরশাহ থানায় মোট ৮টি গাড়ি চুরির মামলা আছে। আসামি আজিজের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া, কোতোয়ালী থানায় মোট ৫টি ও রাফির বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া থানায় ১টি মামলা আছে।
আরএমএন/এমআর/এমএসএ