ছয় দফা বাঙালি জাতির জন্য ম্যাগনাকার্টা ছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এই ছয় দফা ছিল বাঙালি জাতির জন্য ম্যাগনাকার্টা। এই ছয় দফার মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীনতা।

শুক্রবার বিকেলে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ছয় দফা দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, বাঙালির প্রতিটি অর্জন বুকের তাজা রক্তে দিয়ে আদায় করেছে, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আদায় করেছে। বাঙালির যে অবস্থা ছিল, সম্পূর্ণ অরক্ষিত, এরপর কিন্তু বঙ্গবন্ধু ছয় দফা দাবি উত্থাপন করলেন। তখন বাধা দেওয়া হলো, পেশ করতে দেওয়া হলো না। বঙ্গবন্ধু তখন ওখানে বসেই প্রেস কনফারেন্সে বললেন, প্রচার করে দিলেন। তখনই তাকে হত্যারও চেষ্টা করা হলো। এরপর ঢাকায় এসে এয়ারপোর্টে প্রচার করে দিলেন, পরবর্তীতে ছয় দফা ব্যাপকভাবে প্রচার শুরু হলো।

তিনি আরও বলেন, ছয় দফার যে পোস্টার, একটা পোস্টারের কথা বলি... যেমন একটা গরু, তার বুকটা হচ্ছে পূর্বপাকিস্তানে আর পেছনটা হচ্ছে পশ্চিম পাকিস্তানে। অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তান খাবার-দাবার খাওয়ায় আর ওরা (পশ্চিম পাকিস্তান) শুধু দুধ ধোয়ায়। এরকম নানা ধরনের পোস্টার-লিফলেট ছয় দফার ব্যাখ্যা দিয়ে তৈরি হয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, বৈষম্যটাকে দূর করার জন্য যা যা আছে সবকিছুই বঙ্গবন্ধু ছয় দফায় তুলে ধরেছিলেন। ছয় দফা দিলেন ফেব্রুয়ারি মাসে। তখন হাতে সময় খুব কম ছিল। মার্চ-এপ্রিল দুটো মাসের মধ্যে ছয় দফা বাংলাদেশের মানুষ লুফে নিল। এই যে বৈষম্যের চিত্র দেখানো হল, মানুষের মধ্যে সেই চেতনাটা এল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রবৃদ্ধি অর্জন ৯ পার্সেন্ট একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত দিয়ে অর্জিত হয়েছিল। আমরা কেউ আজ পর্যন্ত  তা পারিনি। এরপর যারা ক্ষমতায় এসেছে তাদের তো আর ওইদিকে নজর ছিল না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে যারা ক্ষমতায় এসেছে তাদের মাথায় তো ছিল শুধুমাত্র ক্ষমতা দখল। তাদের মধ্যে ওই পাকিস্তানি মনোভাব, পেয়ারে পাকিস্তানটাই বেশি ছিল, এটা তো আমরা নিজেরা জানি। কীভাবে দেশটাকে একেবারে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। আমরা যদি অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করি, সেই ৭২ সাল, স্বাধীনতার পর থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা; যেটা বঙ্গবন্ধু দিয়েছিলেন দেশটাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রত্যেকটা বক্তব্যে গ্রামের মানুষের উন্নতির কথা বলেছেন। আজকের বাংলাদেশ, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে কাজ করতে পেরেছি বলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। গ্রামপর্যায় পর্যন্ত মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা দেখা দিয়েছে। আমরাও কিন্তু প্রবৃদ্ধি প্রায় আট ভাগের কাছাকাছি নিয়ে এসেছিলাম। মাথাপিছু আয় বাড়িয়েছি। আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে তখন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন শুরু হয়। পরিকল্পিতভাবে যখন আমরা এগিয়ে যাচ্ছিলাম তখন ২০০১ সালে আবার ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি।

এমএসআই/এমজে