এক বছরের ব্যবধানে গ্যাসের দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। তবুও গ্যাস সংকটে বস্ত্রকলের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী। নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, সাভার, আশুলিয়া, মাওনাসহ বিভিন্ন এলাকার বস্ত্রকলগুলোতে এক মাসের বেশি সময় ধরে গ্যাসের চাপ শূন্য থেকে দুই পিএসআই। গ্যাসের অনিয়মিত সরবরাহের কারণে কারখানাগুলোর আধুনিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে পড়ছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকারকে দেওয়া এক চিঠিতে এমন অভিযোগ করেছেন মোহাম্মদ আলী। বাণিজ্য সংগঠনটির পক্ষ থেকে আজ (বুধবার) এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

মোহাম্মদ আলী অভিযোগ করে চিঠিতে বলেন, গ্যাসের তীব্র সংকট থেকে পরিত্রাণ পেতে বারবার সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অনুরোধ করা হয়েছে। এতে গ্যাস সরবরাহে কোনো অগ্রগতি হয়নি। বরং কয়েকদিন ধরে কারখানাগুলোতে গ্যাসের সরবরাহ প্রায় নেই বললেই চলে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে কারখানাগুলো আর কত দিন চালু রাখা সম্ভব হবে, তা নিয়ে আমরা গভীরভাবে শঙ্কিত।

গত বছরের জানুয়ারি থেকে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১৬ টাকা থেকে ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে ৩১ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়েছে। এ সময় সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে আশ্বস্ত করা হয়, শিল্পকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা হবে। দুঃখজনক বিষয় হলো, এক বছরের বেশি সময় ধরে কারখানাগুলো বাড়তি বিল দিলেও গ্যাসের সরবরাহ কখনোই কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছেনি। ফলে উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ায় রপ্তানি আদেশ পরিপালন করতে পারছে না কারখানাগুলো।

বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে পবিত্র ঈদুল আজহায় শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সময়মতো পরিশোধে চরম অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে। কারখানাগুলো বেতন-ভাতা যথাসময়ে পরিশোধ করতে না পারলে এবং তার জন্য কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সৃষ্টি হলে সেই দায়-দায়িত্ব মালিকেরা গ্রহণ করবেন না।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের কাছে অবিলম্বে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়ে বিটিএমএর সভাপতি বলেন, তিন বছরের বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ ও গ্যাস–সংকটের কারণে স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করা যাচ্ছে না। কয়েক মাস ধরে কারখানাগুলো তাদের উৎপাদন সক্ষমতার মাত্র ৪০-৫০ শতাংশ ব্যবহার করতে পারছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে রপ্তানিমুখি তৈরি পোশাকশিল্পে।

এমএইচএন/এমজে